এবার প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করার নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আর তা নিয়ে এখন দেশজুড়ে প্রবল চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের নাম বদল করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। এমনিতেই কৃষকরা ক্ষেপে আছে ফসলের ন্যায্য দাম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও ফয়সালার রাস্তায় না আসায়। ফসল নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রক ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি নিয়েছে। যার জেরে নাম বদল করে রাখা হতে চলেছে—‘রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা ইভম পোষণ যোজনা’। নামকরণ বদল হলে কি কৃষকদের লাভ হবে? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নিছক খাদ্য আউটপুট লক্ষ্য নির্ধারণের পরিবর্তে পুষ্টি লক্ষ্যপূরণের দিকে নজর রাখা উচিত বলে মনে করছে কৃষিমন্ত্রক।
এদিকে হিন্দি ভাষায় এই নাম পরিবর্তন করে একটা বার্তা দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেটি হল, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা এবং পুষ্টি প্রকল্পে গোটা দেশে জোর দেওয়া হচ্ছে। যাতে শিশুদের মধ্যে অ্যানিমিয়া, স্টান্টিং এবং নষ্ট হওয়ার ঘটনা কমিয়ে আনা যায়। সরকারি অনুষ্ঠানে এবং কর্মসূচিতে হিন্দি নামটি ব্যবহার করা হবে ইংরেজির পরিবর্তে। যাতে বৃহত্তর স্বার্থে খাপ খায়। কিন্তু তাতে মানুষের কতটা উপকার হবে সেটা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। এই বিষয়ে এক সরকারি আধিকারিক বলেন, ‘এই পরিবর্তনগুলি কৃষকদের উপকারে আসবে। অনেকে ইংরেজি বোঝেন না। হিন্দি বোঝেন। তাই নানা কর্মসূচি করা হবে কৃষকদের সঙ্গে। যাতে ভালভাবে বোঝানো যায় এবং অপুষ্টির মোকাবিলা করা যায়।’
আরও পড়ুন: বানতলা চর্মনগরী এবার কেএমডিএ’র অধীনে আসতে চলেছে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া
অন্যদিকে এই প্রকল্প এখন ঐতিহ্যবাহী পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফসলের জাতগুলিকে নিয়ে প্রচার করা হবে। যাতে মানুষ স্থানীয় ফসলগুলির গুণাগুন বুঝতে পারে। আর তা সরবরাহ করা হবে। ভিটামিন এবং খনিজ দ্রব্যগুলির মতো মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ স্থানীয় শস্যের উপর জোর দেওয়া হবে। যাতে কেউ অপুষ্টিতে না ভোগে। এমনটাই জানা গিয়েছে মন্ত্রক থেকে। তাই এই নাম বদল। কিন্তু একই নাম রেখে কি এই কাজ করা যেত না? প্রশ্ন উঠছে। কৃষকদের আয় বাড়াতে ২০০৭ সালে একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। যার নাম—কৃষি সম্বর্ধন যোজনা। এবার সবটাই একছাতার তলায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই ‘রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা ইভম পোষণ যোজনা’ বিশেষ জরুরি বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।
এছাড়া ‘রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা ইভম পোষণ যোজনা’ কেন জরুরি? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে কৃষিমন্ত্রকের আর এক অফিসারের বক্তব্য, ‘এটি ভারতে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি সুসংহত এবং প্রভাবশালী কৌশল তৈরি করবে। যা বিদ্যমান কাঠামোর উপর ভিত্তি করে তৈরি হবে। তার ফলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে, পুষ্টিগুণ ভরা ফসলের উপর জোর দেওয়া হবে, মানুষ সচেতন হবে, ফসলের সুরক্ষা এবং পুষ্টির লক্ষ্যপূরণ হবে। এই উদ্যোগে ফসলের উৎপাদন যাতে বাড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।’ তবে এই বিষয়ে তামিলনাড়ুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন বিশেষজ্ঞ কে মণির কথায়, ‘পরিমার্জিত প্রকল্পকে পুষ্টিকর খাদ্য শস্যের বাজারে বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত করতে হবে। বীজ প্রতিস্থাপন হারের উন্নতি উচ্চ উৎপাদনশীলতায় সাহায্য করবে।’