এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাম্প্রতিকতম পর্যবেক্ষণ যে যখন কোনও স্ত্রী তাঁর স্বামীকে অন্য ঘরে শুতে বাধ্য করেন, তাঁকে অন্য ঘরে থাকতে বাধ্য় করেন তিনি তখন তাঁর দাম্পত্যের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন। আর সেটা নিষ্ঠুরতার সমান।
ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি রঞ্জন রায় ও বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন। একজন ব্য়ক্তির ডিভোর্স মঞ্জুর করার সময়তেই তিনি এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি আদালতকে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী তাঁকে জোর করে একটি আলাদা রুমে থাকতে বাধ্য় করেন।যদি তাঁর ঘরে যান তাহলে আত্মহত্যার হুমকি দেন ও ফৌজদারি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
আদালত জানিয়েছে, আপাতভাবে এটা মনে হচ্ছে যে তাঁর স্ত্রী দাম্পত্য সম্পর্ককে কার্যত পরিত্যক্ত হিসাবে ঘোষণা করেছেন ও তিনি তাঁর স্বামীকে আলাদা ঘরে থাকতে বাধ্য় করছেন। সেই প্রসঙ্গে আদালতের তরফে বলা হয়েছে, স্ত্রী ওই বাড়িতে বাস করছেন নাকি বাস করছেন না এটা কোনও আর তাৎপর্য বহন করে না। কারণ স্বামী নির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী তাঁকে তাঁর ( স্ত্রীর) ঘরে ঢুকতে দেন না।
আদালতের পর্যবেক্ষণ একসঙ্গে থাকা হল দাম্পত্য সম্পর্কের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ। তবে যদি স্ত্রী তাঁর স্বামীকে অপর একটা ঘরে থাকতে বাধ্য় করেন ও যে সমস্ত দাম্পত্য অধিকার রয়েছে সেটা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করেন তবে সেটা কারোর মানসিক ও শারীরিকভাবে ভালো থাকার উপর একটি খারাপ প্রভাব ফেলে। এর জেরে মানসিক ও শারীরিক নিষ্ঠুরতার পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর বার অ্যান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে ওই দম্পতির মধ্য়ে বিয়ে হয়েছিল। এটা ছিল ওই মহিলার প্রথম বিয়ে। কিন্তু এটা ছিল ওই পুরুষের দ্বিতীয় বিয়ে। ২০১৮ সালে ওই স্বামী পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন মাত্র ৪-৫ মাস তাঁদের মধ্য়ে সম্পর্ক ঠিকঠাক ছিল। এরপর থেকেই স্ত্রী তাঁর উপর হেনস্থা শুরু করেন।
এদিকে প্রথম দিকে স্ত্রী পারিবারিক আদালতে যেতেন কিন্তু পরে তিনি সমন পাওয়ার পরেও আর যেতেন না। এরপর পারিবারিক আদালত ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে স্বামীর বিরুদ্ধে রায় দেয় যে কী ধরনের নির্যাতন করা হয় সেটা স্বামী জানাননি। এরপর স্বামী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।