সীমান্ত সমস্যা মেটাতে চিনের সঙ্গে আলোচনা জারি রাখবে ভারত। মঙ্গলবার সংসদে এক বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এই কথা জানান। এরই সঙ্গে জয়শংকর আরও জানান, দুই দেশের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে এমন এক কাঠামোর ভিত্তিতে সীমান্ত ইস্যুর সমাধানসূত্র চায় ভারত। তবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার সম্মান করতে হবে। সীমান্ত এলাকায় স্থিতাবস্থা যেন পালটে না ফেলা হয়। উল্লেখ্য, বিগত দিনে চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সমস্যা মেটার ইঙ্গিত মিলেছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর মোতায়েন থাকা সেনা সম্প্রতি প্রত্যাহার করা হয়েছে দুই দেশের তরফ থেকেই। তবে কোন সূত্রে ভারত ও চিনের মধ্যে সমঝোতা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে জয়শংকরের বক্তব্য, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করতে হলে সীমান্তে শান্তি বিরাজমান থাকতে হবে। এই আবহে সীমান্তে যাতে উত্তেজনা আরও কমে, সেই নিয়ে দুই দেশই কাজ করবে।
উল্লেখ্য, গত ২১ অক্টোবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছায় ভারত এবং চিন। তারপর থেকে চিন সীমান্ত নিয়ে ভারত সরকারের বর্তমান অবস্থান নিয়ে এই প্রথম সবিস্তারে বিবৃতি দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এই নিয়ে সংসদে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থাকলেও সীমান্তের বহু জায়গায় সেই রেখা নিয়ে দুই দেশের ধারণা ভিন্ন। চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে ন্যায্য এমন এক সমঝোতায় আমরা পৌঁছতে চাই যা উভয় দেশের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে।'
আর জয়শংকর জানান, চিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্যে তিনটি 'নীতি' অবলম্বন করে চলবে ভারত - উভয় দেশেরই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে সম্মান জানাতে হবে এবং তা মেনে চলতে হবে, কোনও দেশেরই একক ভাবে স্থিতাবস্থা বদলে ফেলা উচিত নয়, অতীতে যে সব চুক্তি বা সমঝোতা দুই দেশের মধ্যে রয়েছে, তা পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। জয়শংকর বলেন, 'আমি সংসদকে জানাতে চাই, পূর্ব লাদাখে ধাপে ধাপে গোটা এলাকায় সো প্রত্যাহার করা হয়েছে। ডেপস্যাং এবং ডেমচক থেকে সেনা সরানোর মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এবার আমরা আশা করছি যে সব ইস্যু নিয়ে আমরা এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম, তা নিয়ে আলোচনা হব।'
চিন নিয়ে জয়শংকর বলেন, 'ভারত এবং চিনের সম্পর্ক বহু দিকেই এগিয়েছে। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলির কারণে তা প্রভাবিত হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই স্পষ্ট করে এসেছি যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যে সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা থাকা অত্যাবশ্যক। সম্প্রতি সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় এবার অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন। তবে এর মধ্যে আমাদের জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। সম্প্রতি চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে দেখা করেছি আমি। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে এটা ঠিক হয়েছে যে এবার শীঘ্রই বিশে প্রতিনিধি এবং সচিব পর্যায়ের আলোচনা শুরু করা যাবে দুই দেশের মধ্যে। '