পাশে তখন বসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাফ বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ' কোনও ডিপ স্টেট-র ভূমিকা নেই। দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। বহু বছর ধরে এই চেষ্টা চলছে। আমি এই সংক্রান্ত খবরাখবর পড়েছি। তবে বাংলাদেশের ব্যাপারটা আমি মোদীর উপরেই ছাড়তে চাই।' সাম্প্রতিক ভারত-বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রাসঙ্গিক। এদিকে, দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনায় বাংলাদেশ পরিস্থিতির কথা যে উঠেছে, তা জানিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি।
মোদীর মার্কিন সফর ঘিরে একাধিক ইস্যুতে সকলের নজরে ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মিটিং। সদ্য সেই সাক্ষাৎ পর্বের পর বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে। এই বৈঠকে যে আলাদা করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি জায়গা করে নিয়েছে, তা জানাতে ভোলেনি দিল্লি। দিল্লির তরফে বিদেশমন্ত্রকের সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশের ' বিষয়ে নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও তাঁর উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন। আর ভারত এই পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখেন, তাও তুলে ধরেছেন।' উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে সেদেশের সনার হেলিকপ্টারে বোন রেহানাকে নিয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদেশে এক উত্তাল পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতাৎ অভ্যুত্থানের জেরে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এদিকে, শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে প্রত্য়র্পণ করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে উদ্যোগী ঢাকা। এই নিয়ে দিল্লির কাছে তারা গুরুত্বপূর্ণ নথিও পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে সব কিছুর মাঝে ট্রাম্পের,'বাংলাদেশের ব্যাপারটা মোদীর ওপ ছাড়ছি' বার্তায় কার্যত দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর সেদেশে একের পর এক হিন্দু মন্দরে হামলার ঘটনা ঘটে। কিছু মাস আগে, সেদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরেও বেশ কিছুটা উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলাদেশে। এর পরই সদ্য ঢাকার ধানমন্ডি ৩২-তে শেখ মুজিবর রহমানের বাসভবন ও স্মৃতি মিউজিয়ামে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। বুলডোজার এনে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও ভারত, বাংলাদেশের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়েও বেশ চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় পক্ষ, ‘ গঠনমূলক ও স্থিতিশীল সম্পর্কের দিকে যেতে চায়’ বলে জানিয়েছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। পাশাপাশি তিনি বলেন,'তবে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী সেই মতামতগুলি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে শেয়ার করেছেন'।