বেঙ্গালুরু যে আজ ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’-তে পরিণত হয়েছে, তাতে তাঁর অবদান কম নয়। আর সোমবার গভীর রাতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন কর্ণাটকের সেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারতের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণ। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিবার সূত্রে খবর মিলেছে যে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন রাজ্যপাল। সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বয়স হয়েছিল ৯২। পারিবারিক সূত্রের খবর, ‘প্রয়াত হয়েছেন এসএম কৃষ্ণ। নিজের বাসভবনে রাত ২ টো ৪৫ মিনিট শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সম্ভবত আজই মদ্দুরে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর মরদেহ।’
১৯৬২ সালে প্রথম নির্বাচনে জিতেছিলেন
মদ্দুর থেকেই জনপ্রতিনিধির যাত্রা শুরু হয়েছিল তাঁর। ১৯৩২ সালের ১ মে কর্ণাটকে মাণ্ড্য জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৬২ সালে মদ্দুর বিধানসভা আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন। পরবর্তীতে প্রজা সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেসে।
কংগ্রেসের সঙ্গে ৫০ বছরের সম্পর্ক
যদিও ২০১৭ সালে কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। শতাব্দীপ্রাচীন দলের সঙ্গে ৫০ বছরের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার সময় তিনি বলেছিলেন, 'দল এখন ধন্দের মধ্যে আছে।' তারপর মার্চে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তবে বিজেপিতে বেশিদিন থাকেননি। বয়সের কারণে গত বছরের জানুয়ারিতে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন।
এসএম কৃষ্ণ ও তাঁর জীবনের ইতিবৃত্ত
১) আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। আমেরিকার টেক্সাসের ডালাসের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন।
২) ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কর্ণাটক বিধানসভা স্পিকারের দায়িত্ব সামলেছিলেন। ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
৩) ১৯৯৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন। যে ভোটে জিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
৪) ১৯৯৯ সালের ১১ অক্টোবর থেকে ২০০৪ সালের ২৮ মে পর্যন্ত কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কর্ণাটকের ১৬ তম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
৫) ১৯৭১ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে একাধিকবার লোকসভা এবং রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন।
৬) মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালও ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ভারতের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন।
৭) অনেকেই মনে করেন, বেঙ্গালুরু যে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি হাব হয়ে উঠেছে, বেঙ্গালুরু যে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে, সেটার নেপথ্যে তাঁর বড়সড় অবদান আছে।