তৃণমূল কংগ্রেস একুশের নির্বাচনের পর থেকে সর্বভারতীয় স্তরে নিজেদের নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে। ত্রিপুরা, অসম সর্বত্র সংগঠন তৈরি করছে ঘাসফুল শিবির। এবার মুকুল সাংমা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন বলে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সেটা যদি ঘটে তাহলে উত্তর–পূর্ব ভারতে কংগ্রেসের বড় ভাঙন ধরবে। মুকুল সাংমা মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন মুকুল সাংমা বলে সংবাদমাধ্যমের একাংশে বলা হচ্ছে। যদিও হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই কথা অস্বীকার করেছেন মুকুল। তাঁর দাবি, ঘনিষ্ঠ কিছু বন্ধুর সঙ্গেই শুধু তাঁর কথা হয়েছে যারা এই নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল। তবে রাজনীতিতে তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ কী, সেই নিয়ে কিন্তু কৌশলী উত্তর দিয়েছেন এই হেভওয়েট নেতা।
শুধু একটি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নন মুকুল সাংমা। বরং মেঘালয়ের রাজনীতিতে বড় নাম। মেঘালয়ে কংগ্রেসের পরাজয়ের পর তিনি সেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসাবে কাজ করছেন। মুকুলকে না জানিয়ে সাংসদ ভিনসেন্ট এইচ পালাকে রাজ্য সভাপতি পদে নিয়োগ করেছে কংগ্রেস। এখান থেকেই তিক্ততার সূত্রপাত। তাই মুকুল সাংমা বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতাকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে একাংশের দাবি।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, কলকাতায় এসে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন মুকুল সাংমা। এক মুকুলকে নিয়ে সংসার চলছে। সেখানে আর এক মুকুল যোগ হলে ক্ষতি কি! এটা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের কথা। ইতিমধ্যেই সুস্মিতা দেব যোগ দিয়েছেন। বাবুল সুপ্রিয় এসেছেন। ত্রিপুরা ভাঙতে শুরু করেছে। অসমে সংগঠন তৈরি হচ্ছে। আর মুকুল সাংমাকে দিয়েই মেঘালয়ে সংগঠন তৈরি হবে।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় প্রায় রোজই কংগ্রেসের কোনও না কোনও নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও তৃণমূল কংগ্রেস কাজ করছে। সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। তারপরও কংগ্রেসে ভাঙন দেখা যাচ্ছে। আবার বিজেপিতেও ভাঙন শুরু হয়েছে। এখন দেখার অসম–ত্রিপুরা–মেঘালয় মিলিয়ে জল কতদূর গড়ায়। যদিও মুকুল সাংমা বলেছেন ‘আমার কাছ থেকে শুনুন। আমি কারও সঙ্গে দেখা করিনি বা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। আমি জানি না এই ধরনের বিভ্রান্তিকর খবরের সূত্র কি’। মুকুল কী অন্য দলে যোগ দেবেন, সেই প্রশ্নে অবশ্য সরাসরি না বলেননি তিনি। তাঁর কথায় কিছু জানাতে গেলে সঠিক মঞ্চেই জানাবো সবাইকে ডেকে। শুধু একটি কোনও সংবাদমাধ্যমকে ডেকে ঘোষণা করব না। অর্থাৎ জোড়া ফুলে জোড়া মুকুল হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।