করোনাভাইরাস ত্রাণ তহবিলের নামে ৫৫ লাখ ডলারের বেশি অর্থের জন্য ভুয়ো আবেদনের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন প্রাক্তন মাইক্রোসফ্ট ডিরেক্টর তথা মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রযুক্তিবিদ মুকুন্দ মোহন। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে আমেরিকায় গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে, তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, নিজের মালিকানায় থাকা ৬টি সংস্থার জন্য ইউএস পে চেক প্রোটেকশন প্রোগ্রাম-এর আওতায় আটটি ঋণের আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন মোহন। এই প্রকল্পে অতিমারী পর্বে ব্যবসায়ী ও মার্কিন কর্মীদের সাহায্যের জন্য ঋণ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। নির্দিষ্ট কাজে ঋণ বাবাদ প্রাপ্ত অর্থ ব্যয় হলে তা অনুদানে রূপান্তরিত করার নিয়মও চালু রয়েছে। অভিযোগ, উল্লিখিত ছয় সংস্থায় একজন কর্মীও নিয়োগ করা হয়নি এবং কয়েকটি সংস্থার শুধুমাত্র খাতায়-কলমেই অস্তিত্ব রয়েছে।
২০০৮ সালে আমেরিকা থেকে বেঙ্গালুরুতে ফিরে প্রথমে নিজের স্টার্টআপ ব্যবসা চালু করার চেষ্টা করেন মোহন। এর পরেই সদ্য চালু হওয়া মাইক্রোসফ্ট-এর স্টার্টআপ অ্যাক্সিলেটর প্রোগ্রাম-এর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ২০১৪ সালে তিনি আমেরিকায় ফিরে আসেন। ২০১৫ সালে তিনি মাইক্রোসফ্ট ছেড়ে দেন।
মোহনের লিংকেডিন প্রোফাইল অনুযায়ী, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে তিনি অ্যামাজন-এর পণ্য ব্যবহস্থাপনা বিভাগের ডিরেক্টর পদে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সঙ্গে একাধিক স্টার্টআপ সংস্থার অংশ হিসেবেও তাঁর নামোল্লেখ রয়েছে প্রোফাইলে। এ ছাড়া নিজেকে উত্তর আমেরিকার অনলাইন গৃহসজ্জা সংস্থা বিল্ডডাইরেক্ট-এর সিটিও হিসেবেও পরিচয় দিয়েছেন মুকুন্দ মোহন।
ইউএস অ্যাটর্নি-র তরফে অভিযোগ, কোভিড ত্রাণের অর্থ পেতে ভুয়ো নথিপত্র দাখিল করেন মোহন। ত্রাণ হিসেবে সংগৃহীত অর্থ ‘রবিনহুড’ আর্থিক পরিষেবা সংস্থার মাধ্যমে তিনি নিজের ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলেন।
মোহনের মালিকানাধীন আর এক সংস্থা মহেঞ্জো-র নামেও ঋণের জন্য আবেদন জমা পড়ে। এই সংস্থা সম্পর্কেও সমস্ত ভুয়ো নথি জমা দিয়েছিলেন ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ। অভিযোগ, ওই সংস্থা শুধুমাত্র খাতায়-কলমেই ছিল, বাস্তবে কখনই চালু হয়নি। অথচ নথিতে সংস্থার কর্মী সংখ্যা, জমা দেওয়া করের পরিমাণ ইত্যাদি ভুয়ো তথ্য পেশ করা হয়েছিল। এমনই আরও ৫টি ভুয়ো সংস্থার নামে ঋণের আবেদন জমা দিয়েছিলেন বলে মোহনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।