ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বীরভূম জেলার ভূমিকা নিয়ে বরাবর উচ্ছ্বসিত ও শ্রদ্ধাবনত ছিলেন মিরিটি গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের আদরের ‘পল্টু’, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও পাঁচ দশক ধরে জাতীয় ও রাজ্য রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করা প্রণব মুখোপাধ্যায়।
বীরভূমের নানুর থানার মিরাটি গ্রামেই বেড়ে ওঠা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের৷ এক সময় বাবা কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল মুখোপাধ্যায় বাড়ির এই দুর্গাপুজো৷ সিউড়ি শহরের একটি রাস্তা তাঁর নামেই নামাঙ্কিত করা হয়।
সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে বীরভূম জেলার ব্যক্তিত্বরা যে ভূমিকা নিয়েছিলেন তাতে ভারতের ইতিহাসে এই জেলার নাম খুবই উপরের দিকে লেখা রয়েছে। যাঁরা দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন অতিবাহিত করেছিলেন তাঁদের মধ্যে কামদাকিংকর মুখোপাধ্যায় একজন। তাঁর নামে এই রাস্তার নামকরণ হওয়ায় তাঁর পুত্র হিসেবে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসরগ্রহণের পরেও ২০১৯ সালে শেষ বার মিরিটির বাড়িতে এসেছিলেন প্রণববাবু। সাধারণত দশমী পর্যন্ত নিজের গ্রামের বাড়িতেই তিনি থাকতেন। বাড়ির পুজোয় ঘট আনা থেকে শুরু করে যাবতীয় আচার আচরণ মেনে চলতেন নিষ্ঠাভরে। পুজোয় স্বকণ্ঠে চণ্ডীপাঠ করতে তিনি বরাবরই পছন্দ করতেন। আন্তরিকতার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও ছিল শারদীয় আনন্দের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সোমবার বিকেলে চিরকালীন সেই রীতির অবসান ঘটল।
দুর্গাপুজোয় আর কোনও দিন মিরিটি গ্রামে ফিরবেন না তিনি। কীর্নাহার স্কুলমাঠে আর কখনও নামতে দেখা যাবে না তাঁর হেলিকপ্টার। এ বছর ১২৩ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে মুখোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো৷ কিন্তু দুর্গা পিত্রালয়ে ফেরার আগেই চিরবিদায় নিলেন কীর্ণাহারের বিশ্বখ্যাত ব্রাহ্মণ সন্তান।