বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > আর্থিক তছরুপ মামলায় গ্রেফতার তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ

আর্থিক তছরুপ মামলায় গ্রেফতার তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ

কে ডি সিং (ফাইল ছবি, সৌজন্য হিন্দুস্তান টাইমস)

সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে ২৩৯ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।

আর্থিক তছরুপের মামলায় গ্রেফতার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কে ডি সিং। বুধবার তাঁকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সূত্রের খবর, অ্যালকেমিস্ট গ্রুপের কর্ণধারের বিরুদ্ধে ২৩৯ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।

ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদকে মঙ্গলবার দিল্লির সদর দফতরে ডাকা হয়েছিল। প্রায় সাড়ে ছ'ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর থেকে চাওয়া হয় বিভিন্ন নথি। একইসঙ্গে তাঁকে বুধবার আরও এক দফায় ডাকা হয়। কিন্তু সেখানে রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ নথি পেশ করতে পারেননি বলে সূত্রের খবর। তারপরই কে ডি সিংকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের অভিযোগ, তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না প্রাক্তন সাংসদ।

সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই আর্থিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে যায় লগ্নিসংস্থা অ্যালকেমিস্টের নাম। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করে ইডি। তদন্তকারীদের অভিযোগ ছিল, ২০১৫ সালের মধ্যে বেআইনিভাবে বাজার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা তোলা তুলেছিল অ্যালকেমিস্ট। অঙ্কটা প্রায় ১,৯১৬ কোটি টাকা হবে। সেই অর্থ বিদেশেও পাচার করা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।

বিধানসভা ভোটের মাসকয়েক আগেই তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদের গ্রেফতারির ঘটনায় যথারীতি রাজনীতি শুরু হয়েছে। ২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন কে ডি। কিন্তু ২০১৬ সালে নারদ কাণ্ডের পর তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ পড়ে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দাবি করেছেন, কে ডির সঙ্গে দীর্ঘদিন তৃণমূলের সম্পর্ক ছিল না। তিনি বলেন, ‘আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তিনি এখন সাংসদও নয়। দোষ নিশ্চয়ই করেছে, তাই গ্রেফতার করা হয়েছে’। একধাপ এগিয়ে আবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেন, ২০১৩ সালেই তিনি কে ডির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বুঝিয়ে দলে নিয়েছিলেন। তাই সেই ঘটনায় মুকুলকেও গ্রেফতার করা উচিত ইডির।

পালটা বিজেপির দাবি, এখন তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও যখন কে ডির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তখন তাঁর সঙ্গে ঘাসফুল শিবিরের তো দহরম-মহরম ছিল। একইসঙ্গে বহিরাগত ইস্যুতেও খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, তৃণমূল তো অমিত শাহ, জে পি নড্ডাদের বহিরাগত বলে। কে ডিকেও তো বাইরে থেকে এনে সাংসদ করা হয়েছিল। একইসঙ্গে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মুখ খোলার দাবি করা হয়। 

তবে তৃণমূল-বিজেপির সেই তরজার একেবারেই পাত্তা দিতে রাজি নয় বাম এবং কংগ্রেস। দুই শিবিরের বক্তব্য, পুরোটাই তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ‘গট-আপ’। বাম শিবিরের এক নেতার বক্তব্য, কে ডিকে তো এখন গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েকদিন পর বিজেপিতে যোগ দিলেও অবাক হব না।

বন্ধ করুন