খাতায়কলমে গ্রেফতার করা হল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও বেআইনিভাবে নিজের কাছে জাতীয় সুরক্ষা সংক্রান্ত নথি রাখা এবং যাঁরা সেই নথি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের মিথ্যা কথা বলার অভিযোগে যিনি মঙ্গলবার (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) মায়ামির ফেডেরাল কোর্টে হাজিরা দেন। সেখানে তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। তারইমধ্যে মঙ্গলবার শুনানির পর আদালত থেকে বেরিয়ে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, আমেরিকার ইতিহাসে সবথেকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রেসিডেন্ট হলেন বাইডেন। তিনি ফের ক্ষমতায় এলে বাইডেনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করারও হুঁশিয়ারি দেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে ট্রাম্প এই প্রথম আইনি জটিলতায় জড়ালেন না। গত এপ্রিলেই পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলস সংক্রান্ত মামলায় সরকারিভাবে ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্পই প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, যিনি গ্রেফতারির মুখে পড়েছিলেন। আর এবার ট্রাম্পের লজ্জার বহর আরও বেড়েছে। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে ফেডেরাল অপরাধে (যে অপরাধ-বিরোধী আইন পাস করেছে সেনেট ও হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ, স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট) মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা আমেরিকার ইতিহাসে কোনও প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে হয়নি।
আরও পড়ুন: Donald Trump charges: পর্নস্টারকে ঘুষ দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রয়েছে মোট ৩৪টি অভিযোগ!
যদিও সেই লজ্জার নয়া অধ্যায় রচিত হলেও ট্রাম্প একেবারে স্বমহিমায় ছিলেন। আদালতে হাজিরা দেওয়ার বিষয়টিকে কার্যত নিজের প্রচারের ময়দান বানিয়ে ফেলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একেবারে সাহসী মুখ তুলে ধরার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন যে তিনি কোনও দোষ করেননি। ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তাঁকে রাজনৈতিক কারণে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে (আদালতে আসার পর ট্রাম্পকে সরকারি খাতায় গ্রেফতার দেখানো হয়)। আদালতেও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন ট্রাম্প।
সেই শুনানির পর মায়ামির থেকে বিমানে চেপে নিউ জার্সিতে নিজের গলফ ক্লাবে চলে যান ট্রাম্প। সেখানে বাইডেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, ‘(আমি ক্ষমতায় এলে) আমি সত্যিকারের একজন স্পেশাল প্রসিকিউটরকে নিয়োগ করব। যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবথেকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাইডেনের পুরো অপরাধী গোষ্ঠীকে নিয়ে তদন্ত করবেন। একজন স্পেশাল প্রসিকিউটরের নাম বলুন।’
তারপরই ট্রাম্প সমর্থকরা ‘লক হিম আপ’ (বাইডেনকে গ্রেফতার করুন) বলে সমস্বরে চেঁচাতে থাকেন। তারইমধ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেন, জাতীয় সুরক্ষা সংক্রান্ত যে সব নথির কথা বলা হচ্ছে (যে অভিযোগে মামলা করা হয়েছে), সেইসব নথির সিল আদতে ভেঙেছে বাইডেনের প্রশাসন।