আদিবাসী নাবালিকাকে অন্তত দু'বার গণধর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল চার সরকারি আধিকারিককে! চরম ন্যক্কারজনক, পৈশাচিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তীসগড়ের মানেদ্রাগড়-চিরমিরি-ভাতারপুর জেলায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে চারজনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে - ওই আদিবাসী কিশোরীর স্কুলের অধ্যক্ষ (ধৃতদের মধ্যে সবথেকে বয়স্ক), প্রধান শিক্ষক এবং আরও এক শিক্ষক রয়েছে! তাদের সঙ্গত দেওয়া চতুর্থ অভিযুক্ত পেশায় ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার।
পুলিশের তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা এককথায় ভয়াবহ! তাদের অনুমান, নাবালিকাকে একাধিকবার গণধর্ষণের ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে। তবে, সেই বিষয়ে নিশ্চিতভাবে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। কিন্তু, ঘটনায় জড়িত কাউকেই যে রেয়াত করা হবে না, পুলিশের তরফে তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্থানীয় রেঞ্জের আইজি অঙ্কিত গর্গ জানিয়েছেন, 'যদি পুলিশের তদন্তে দেখা যায়, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।'
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তরা কেবলমাত্র একাদশ শ্রেণির ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা সেই ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে রাখে এবং সেই সেই রেকর্ডিংয়ের কথা বলেই বারবার ওই কিশোরীকে ব্ল্যাকমেল করে।
আইজি জানিয়েছেন, ১৭ বছরের ওই কিশোরী বর্তমানে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। এই নারকীয় ঘটনা তার মনে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে, পুলিশ তার কাছ থেকে যেটুকু তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছে, তার সাহায্যে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব।
১৭ বছরের ওই কিশোরী অত্যন্ত মেধাবী। স্কুলের পর সে একটি প্রাইভেট সেন্টারে কম্পিউটার শিখতে যেত। কিন্তু, যেহেতু তার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার, তাই স্কুল ছুটির পর সে সরাসরি বাড়ি ফিরত না।
কিছুক্ষণ স্কুলে থেকে তারপর কম্পিউটার ক্লাস করে একেবারে বাড়ি ফিরত। তার স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক একথা জানতেন।
গত ১৫ নভেম্বর মেয়েটি যখন তার কম্পিউটার ক্লাস সেরে বের হয়, এক শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। সেই শিক্ষক তাকে বলে, ওই ছাত্রীকে বাড়ি পৌঁছে দেবে।
মেয়েটি রাজি হয়ে শিক্ষকের সঙ্গে চলে যায়। কিন্তু, সেই শিক্ষক কিশোরীকে তার বাড়ির বদলে অন্য একটি ভাড়ার ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই তার স্কুলের ৫৫ বছরের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক এবং একজন ডেপুটি ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার অপেক্ষা করছিল!
সেই ঘরেই প্রথমবার ওই কিশোরীকে এই চারজন গণধর্ষণ করে এবং সেই ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে রাখে বলে অভিযোগ।