চাকরি ছাড়ুন(ঝামেলা থামান?)। ১০,০০০ ইউয়ান(১ লক্ষ টাকা) নিয়ে বাড়ি যান।
কর্মীদের তীব্র বিক্ষোভ, ভাঙচুরের মুখে সামাল দিতে এমনই 'শান্তি চুক্তি' অফার করল চিনে ফক্সকনের কারখানা কর্তারা। চিনের হেনান প্রদেশের ঝিয়াংঝউ এলাকার এই কারখানাই অ্যাপেলের আইফোনের বৃহত্তম নির্মাতা।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই এই কারখানায় তীব্র অসন্তোষ প্রদর্শন শুরু করেন কর্মীরা। এর আগে অক্টোবর মাসে করোনা পরিস্থিতিতে খারাপ কাজের পরিবেশের প্রতিবাদে অনেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। এদিকে কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সেই ফক্সকনের কারখানাই বিপুল বেতনের লোভ দেখিয়ে নতুন বিজ্ঞাপন দিয়েছে। সেটি দেখে অনেক নতুন কর্মী দেশের দূর-দূরান্ত থেকে এসে কাজ গ্রহণ করেন। কিন্তু শেষমেশ দেখা যায়, আসল বেতন অনেক কম। খারাপ পরিস্থিতি ঘিরে কর্মীদের রাগ ছিলই। বেতনে অসামঞ্জস্য থেকে প্রতিবাদ চরমে পৌঁছায়। 'ভুয়ো বিজ্ঞাপন' দিয়ে ফক্সকন তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে দাবি তুলেছেন প্রতিবাদী কর্মীরা। ঠিক কত টাকার বেতন দেওয়া হবে বলে অঙ্গীকার করেছিল ফক্সকন? জানলে হতবাক যাবেন(এই লিঙ্কে)
ভাঙচুর
বুধবার ঝিয়াংঝউ শহরে আইফোন প্ল্যান্টে শ'য়ে শ'য়ে কর্মী বিক্ষোভে যোগ দেন। অনেকেই কারখানার সার্ভেলেন্স ক্যামেরা ভেঙে দেন। এরপর পুলিশ আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে এলে তাঁদের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ শুরু হয়। রীতিমতো রণক্ষেত্র তৈরি হয় কারখানা চত্বরে।
ফক্সকনের এই কারখানায় কর্মী সংখ্যা শুনলে চমকে যাবেন। কত জানেন? ২ লাখ! হ্যাঁ, ঠিক এই সংখ্যক কর্মীই কাজ করেন ফক্সকনের এই প্রধান ফ্যাক্টরিতে। এটি তাইওয়ানের সংস্থা। জনপ্রিয় গ্যাজেট সংস্থা অ্যাপেলের বরাতের ভিত্তিতে স্মার্টফোন তৈরি করে ফক্সকন। এটাই বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাপেল কারখানা। এই ২ লক্ষ কর্মীর অধিকাংশই তাঁদের নিয়োগকারীর উপরে অসন্তুষ্ট। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চান তাঁরা।
সংস্থা কী বলছে?
একটি অফিসিয়াল বিবৃতিতে ফক্সকন জানিয়েছে, 'আমাদের টিম গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। অনবোর্ডিং প্রক্রিয়া চলাকলীন প্রযুক্তিগত ত্রুটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।' সেই ত্রুটির কারণেই নাকি বেতন প্রক্রিয়া ঘেঁটে গিয়েছে, দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের। সংস্থা জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনে যে বেতনের কথা বলা হয়েছিল, সেই বেতনই প্রদান করা হবে। কম্পিটারের ইনপুট এররের ফলে এই সমস্যা।
সংস্থার আশ্বাসের পর বৃহস্পতিবার যদিও প্রতিবাদের ঝড় স্তিমিত হয়ে গিয়েছে। ফক্সকন জানিয়েছে, কর্মীদের বকেয়া প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া হবে। কেউ যদি কাজে ইস্তফা দিতে চান, তাহলে তাঁদেরও ভাতা দেওয়া হবে। ভাতার অঙ্ক প্রতিবেদনের শুরুতেই উল্লেখিত।