পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল। এই অবস্থায় কিছুটা উদার হওয়ার চেষ্টা করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নয়া আর্থিক প্যাকেজের আওতায় কার্ডহীন পরিযায়ী শ্রমিকদের আগামী দু'মাস বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেবে কেন্দ্র।
নয়া প্যাকেজের দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যার সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, যে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন এবং রাজ্যের উপভোক্তা তালিকায় নেই, তাঁদের আগামী দু'মাস বিনামূল্য রেশন দেওয়া হবে। সীতারামন বলেন, 'কার্ডহীন পরিযায়ী শ্রমিকদের আগামী দু'মাস মাথাপিছু পাঁচ কেজি চাল বা গম এবং পরিবারপিছু এক কেজি ডাল দেওয়া হবে। এর ফলে দেশের প্রায় আট কোটি পরিযায়ী শ্রমিক উপকৃত হবেন এবং ৩,৫০০ কোটি টাকা খরচ করবে কেন্দ্র।' প্রকল্পের পুরো খরচ কেন্দ্র বহন করলেও পরিযায়ী শ্রমিকের চিহ্নিত করে রেশন বিলির দায়িত্ব রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি বাড়ি থেকে দূরে বা ভিন রাজ্যে থাকলেও পরিয়াযী শ্রমিকরা যাতে রেশন পান, তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানান সীতারামন। তিনি জানান, ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’-এর আওতায় দেশের যে কোনও জায়গার রেশন দোকান থেকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য নিতে পারবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। সীতারামন দাবি করেন, ইতিমধ্যে দেশের ২০ টি রাজ্যের মধ্যে এই সুবিধা পাওয়া যায়। আগামী অগস্টের মধ্যে দেশের ২৩ টি রাজ্যে সেই সুবিধা মিলবে। ফলে রেশন নেওয়া ৬৭ কোটি অর্থাৎ ৮৩ শতাংশ মানুষ সেই প্রকল্পের আওতায় আসবেন। আগামী বছর মার্চের তা পুরো ১০০ শতাংশ হবে দাবি করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
তবে অনেক সময় তো পরিবার ছেড়ে বাইরে পরিযায়ী শ্রমিকরা একা থাকেন, সেক্ষেত্রে তিনি ও তাঁর পরিবার একইসঙ্গে কীভাবে রেশন পাবেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছিল। পরে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, প্রযুক্তির সাহায্যে পুরো বিষয়টি সামলানো হবে। আধার কার্ড থাকায় কাজটা আরও সুবিধার হবে।
একইসঙ্গে ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকার জায়গা নিয়ে যে সমস্যার মুখে পড়তে হয়, তা অজানা নয় কেন্দ্রের। লকডাউনের ঘোষণার পর তা আরও মাথাচাড়া দেয়। বৃহস্পতিবার তা কিছুটা সমাধানের চেষ্টা করল কেন্দ্র। সীতারামন জানান, পরিযায়ী শ্রমিক-সহ শহুরে গরীবরা যাতে সহজলভ্য ভাড়াবাড়ি পান, তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় নয়া একটি প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। পিপিই মডেল, রাজ্য, শিল্পপতিদের সঙ্গে এই বাড়ি তৈরি করা হবে বলে জানান সীতারামন।