মুখে বললেন, নির্বাচনী প্রচার নয়। কিন্তু একের পর এক ‘তাস’ খেললেন অমিত শাহ। একেবারেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) থেকে শুরু করে জাতীয়তাবাদ, সবকিছু দিয়েই বুঝিয়ে দিলেন কয়েক মাস পরেই বিহারে বিধানসভা ভোট। আর প্রচারের দামামা তিনিই বাজিয়ে দিয়ে গেলেন।
ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, তা ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেই বুঝিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। তাই দেশজুড়ে বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হতে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে 'বিহার জনসংবাদ র্যালি'-র আয়োজন করে গেরুয়া শিবির। রবিবার সেই র্যালিতে শাহ জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সারাদেশের মানুষ একসঙ্গে আসার মঞ্চ এটা এবং বছরের শেষভাগে বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে এই র্যালির কোনও যোগ নেই।
শাহ বলেন, 'আমি কোটি কোটি করোনা যোদ্ধাকে স্যালুট জানাতে চাই। যাঁরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে। স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ এবং অন্যান্য (করোনা যোদ্ধাদের) অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই ভার্চুয়াল র্যালি কোনও নির্বাচনী বা রাজনৈতিক সভা নয়। করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে সারাদেশের মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে আসার র্যালি এটা।'
সেই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরই দেশের স্বার্থে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং এয়ারস্ট্রাইক চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন শাহ। তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন যে কেউ আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ত, আমাদের জওয়ানদের মুণ্ডচ্ছেদ করত এবং দিল্লির দরবারে কোনও প্রভাব পড়ত না। উরি এবং পুুলওয়ামা আমাদের সময় হয়েছিল, এটা মোদী এবং বিজেপি সরকার, আমরা করেছি।’ চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদের মাঝেই শাহ দাবি করেন, ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি সারা বিশ্বে সমাদৃত হচ্ছে। মোদীর বিশ্বস্ত চাণক্যের কথায়, ‘সারা বিশ্ব একমত যে আমেরিকা এবং ইজরায়েলের পর যদি কোনও দেশ নিজের সীমান্ত রক্ষা করতে সক্ষম, সেটা হল (সার্জিক্যাল স্ট্রাইক) ভারত।’
তবে শুধু প্রতিরক্ষা বা সীমান্ত রক্ষায়, সার্বিকভাবে মোদী সরকারের বিভিন্ন ‘সাফল্য’ তুলে ধরেন শাহ। পাশাপাশি নেপালের সঙ্গে সীমান্তবর্তী রাজ্যের র্যালিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সুফল তুলে ধরেন। দাবি করেন, সংশোধনী আইন ভারতের উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিয়েছে। সম্মান দিয়েছে।
একইসঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে মোদী সরকার কতটা চিন্তিত, তাও জানান শাহ। গত ৩ জুন পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের পর বিহারেই সবথেকে বেশি ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন (১৪৯৫) এসেছে বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছে কেন্দ্র। সেই রেশ ধরেই রবিবার শাহ জানান, শ্রমিকদের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া, কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র তৈরির পর তবেই গত ১ মে থেকে ট্রেন চলেছে। শাহের কথায়, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি সম্মান হিসেবে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন নাম দেওয়া হয়। বিজেপির মোদী সরকার প্রায় ১.২৫ কোটি পরিযায়ী শ্রমিককে সুরক্ষিতভাবে ভিটেয় পৌঁছে দিয়েছে।’