বাংলাদেশে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তের সংসার খরচ সামলাতে গিয়ে রীতিমত মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে। জ্বালানির সঙ্গে খরচ বাড়ছে হুহু করে। একেই এতদিন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাজার দর চড়ছিল। এবার সেটাকে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল জ্বালানির দাম বৃদ্ধি। জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে অনেকটাই বাড়ানো হল বাংলাদেশে।
ডিজেল এবং কেরোসিন তেলের দাম হয়েছে ১১৪ টাকা প্রতি লিটার। অর্থাৎ মোট ৪২.৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। অন্যদিকে পেট্রোলের দাম তার থেকেও অনেক বেশি বেড়েছে। বর্তমানে পড়শি দেশে পেট্রোলের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা প্রতি লিটারে, অর্থাৎ ৫১.১৬ শতাংশ দাম বেড়েছে। আগে পেট্রোলের দাম ছিল ৮৬ টাকা প্রতি লিটার। আর অকটেনের দাম বেড়েছে প্রায় ৫১.৬৮ শতাংশ। তাই বাংলাদেশে এখন অকটেন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই দাম বৃদ্ধির কথা জানানো হয়েছে। এই নতুন দাম শুক্রবার মধ্যরাতের পর থেকেই লাগু হয়েছে।
গত সপ্তাহ থেকেই ডিজেল সহ অন্যান্য জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কথা শোনা যাচ্ছিল মন্ত্রীদের মুখে। কয়েকজন ব্যবসায়ীও দাবি জানিয়েছিলেন দরকারে টাকা বাড়িয়েও যেন গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ জারি রাখা হয়। গত বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআইয়ের তরফে যে বিদ্যুৎ জ্বালানি বিষয়ক আলোচনা হয়েছিল সেখানে এমনই কথা উঠেছিল। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, নসরুল হামিদ একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, যেভাবে বিশ্ব বাজারে দাম বাড়ছে জ্বালানির তাতে বাংলাদেশেও দাম জ্বালানির দাং বাড়ানো হল। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে জ্বালানির তবে সংসার খরচ তা পাল্লা দিয়ে বাড়বে।
কী কী প্রভাব পড়বে জনসাধারণের জীবনে?
তেলের দাম বাড়ার খবর আসতেই ঢাকার তেল ফিলিং স্টেশনগুলোতে রীতিমত ভিড় লেগে যায়, এক লাফে এতটা দাম বাড়ার আগে সকলেই চাইছিলেন যেন আগের দামে বেশ খানিকটা তেল ভরে নেওয়া যায়। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছয় যে বেশ কিছু ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দিতে হয়। আর যাঁরা খুলে রেখেছিলেন তাঁদের ফিলিং স্টেশনের লাইন রাস্তায় গিয়ে ঠেকেছিল।
তবে শুধুই তো পেট্রোল নয়, দাম বেড়েছে ডিজেলেরও। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে বাস, কভার্ডভ্যান, লঞ্চ সবের ভাড়াই বাড়বে। বাদ যাবে না ট্রাকের ভাড়াও। ফলে জিনিসপত্রের দাম যে অগ্নিমূল্য হতে চলেছে, গাড়িভাড়াও যে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে সেটা বলাই বাহুল্য! কারণ ট্রাক এবং লঞ্চ ভাড়া বাড়া মানে যে পণ্যগুলো এতে করে সরবরাহ করা হয় সেগুলোর দাম বৃদ্ধি পাওয়া। এক কথায়, পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ার ফলে মহাসংকটে পড়ল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ।