রাজ্য সরকারের টাকায় চলে বাচ্চাদের স্কুল। সেই স্কুলেই পড়ুয়াদের খাওয়ার জন্য বিলি করা হয়েছিল 'নিউট্রিশনাল স্ন্যাক্স'। আর, সেই 'পুষ্টসমৃদ্ধ' খাবারেই পাওয়া গেল ছত্রাক, জীবন্ত লার্ভা! অভিযোগ অন্তত তেমনটাই করা হচ্ছে।
সূত্রের আরও দাবি, অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো এবং ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের আদিবাসী অধ্যুষিত পালঘর এলাকায়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, অন্তত দু'টি জেলা পরিষদের তরফে বিলি করা খাবারে এই ছত্রাক ও লার্ভা পাওয়া গিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন পালঘরের জেলাশাসক গোবিন্দ বোদকে। সোমবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বাচ্চাদের বিলি করা ওই খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তাঁর আশ্বাস, গবেষণাগারের খাবারের নমুনা পরীক্ষা করে যদি দেখা যায়, যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্যি, তাহলে সংশ্লিষ্ট খাদ্য সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে আইন অনুসারে কঠোরতম পদক্ষেপ করা হবে।
সূত্রের দাবি, প্রাথমিকভাবে খানিভলি এলাকার আনন্দ লক্ষ্মণ চন্দাবর বিদ্যালয় এবং চিনচানি জেলা পরিষদের স্কুল নম্বর ৩ থেকে অভিযোগ আসে যে বাচ্চাদের দূষিত খাবার বিলি করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, ওই স্কুলগুলির পড়ুয়াদের চিক্কি খেতে দেওয়া হয়েছিল। যা এক ধরনের মিষ্টি এবং তা মূলত - নিউট্রিশনাল স্ন্যাক্স হিসাবেই ব্যবহার করা হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ, সেই চিক্কিগুলিতে পুরো ছত্রাক পড়ে গিয়েছিল। এমনকী, তার মধ্যে জীবন্ত লার্ভাও ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে!
তেমনই এক অভিভাবক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে বলেন, 'আমাদের বাচ্চাদের স্বাস্থ্য নিয়ে ছেলেখেলা করা হচ্ছে। তাদের যে খাবার খেতে দেওয়া হয়, আমরা কীভাবে নিশ্চিন্তে আমাদের সন্তানদের সেই খাবার খেতে দেব?'
রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এই ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়, পিছিয়ে পড়া এলাকার দরিদ্র পরিবারের শিশুরা যাতে সরাসরি পুষ্টিকর খাবার খেতে পায়, তা নিশ্চিত করতেই সরকারি স্কুলগুলিতে এই ধরনের খাবার বিলি করা হয়।
অথচ, সেই খাবারের মান নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকরা। আরও একজন অভিভাবক যেমন বলেছেন, 'আমরা বারবার খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ করেছি। কিন্তু, প্রশাসন আমাদের বাচ্চাদের স্বাস্থ্য নিয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন।'
যদিও জেলাশাসক ইতিমধ্যেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন বলে পিটিআই সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, একথা সত্যি যে কয়েকটি স্কুলে বণ্টন করা খাবারের মধ্যে ছত্রাক ও লার্ভা পাওয়া গিয়েছে।
পিটিআই-কে তিনি বলেন, 'জেলাস্তরের আধিকারিকরা ওই খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করানোর জন্য গবেষণাগারে পাঠিয়েছেন। যাতে আমরা সেখান থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেতে পারি। সেই রিপোর্ট যত দিন না আমাদের হাতে আসছে, তত দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সেই রিপোর্ট জমা পড়লেই সংশ্লিষ্ট খাবার সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'