হিন্দুত্ববাদকে মুছে ফেললে তবেই স্বপ্নের ভারত গড়ে উঠবে। যে ভারতে সাম্যের জয়গান গাওয়া হবে। থাকবে না জাত-বর্ণের বিভেদ। কোনও নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষ সমাজে ছড়ি ঘোরাতে পারবেন না। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) দিল্লির এক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের এমনই মন্তব্যে চটলেন নেটিজেনদের একাংশ। তাঁদের দাবি, হিন্দুত্ববাদকে বাদ দিয়ে ভারত গড়ার ডাক দিচ্ছেন যিনি, সেই তিনি ভারত সরকারের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। আর যে ভারত সরকারে ক্ষমতায় আছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। তবে নেটিজেনদের একাংশ আবার ওই অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের সমর্থনে মুখ খুলেছেন।
ভারতে জি২০ সম্মেলনের আগে ফরাসি সংবাদমাধ্যম 'ফ্রান্স ২৪'-র একটি অনুষ্ঠানে আইআইটি দিল্লির ফিলোজফির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর দিব্যা দ্বিবেদী বলেন, ‘যদি আমরা ভারতের দিকে তাকাই, তাহলে দুটি ভারত আছে। একটা ভারত হল অতীতের ভারত। যেখানে বর্ণের ভিত্তিতে একটি ব্যবস্থা আছে, যা বেশিরভাগ মানুষকে নিপীড়ন করে।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেইসঙ্গে আরও একটি ভারতের ধারণা আছে। যা ভবিষ্যতের ভারত। যেখানে বর্ণভিত্তিক নিপীড়ন ও হিন্দুত্ববাদ থাকবে না। সেখানে সমতা থাকবে। সেই ভারত এখনও গড়ে ওঠেনি। সেটার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: S Jaishankar: 'বিভাজিত বিশ্বকে এক করার দায়িত্ব ভারতের', বড় মন্তব্য বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের
সেইসঙ্গে বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকেও (আরএসএস) আক্রমণ শানান আইআইটি দিল্লির ফিলোজফির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। তিনি বলেন, ‘যাঁরা ৩,০০০ বছর ধরে বর্ণভিত্তিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন, যাঁদের দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে, এমনকী হিন্দু ধর্মের নামে বিকৃতভাবে তাঁদের তুলে ধরা হচ্ছে। আর এখন সেই ভারতকেই তুলে ধরা হচ্ছে। এই সম্মেলনেও সেই ভারতকে তুলে ধরা হচ্ছে। (জি২০) সম্মেলনের লোগোতে যে রং হয়েছে, তা শাসক দলের রঙের প্রতিনিধিত্ব করছে। যে দলের সঙ্গে আরএসএসের যোগ আছে। যা শুধুমাত্র ফ্যাসিস্ট সংগঠন নয়, বরং সেই সংগঠন ভারতের উচ্চবর্ণের আধিপত্যের প্রতিনিধিত্ব করে।’
যদিও হিন্দুত্ববাদ নিয়ে আইআইটি দিল্লির ফিলোজফির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের মন্তব্যে চটেছেন নেটিজেনদের একাংশ। তেমনই এক নেটিজেন বলেন, ‘হিন্দুত্ববাদকে বাদ দিয়ে..এটাই হয়, যখন জোকাররা কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। উনি একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। যখন টানা নয় বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন হিন্দুত্ববাদী নেতারা।’ অপর একজন বলেন, ‘প্রচারের আলোয় আসার জন্য এসব মন্তব্য করেছেন।’
ওই অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের সমর্থন করেছেন নেটিজেনদের একাংশও। একটি ভিডিয়ো রিটুইট করে একজন বলেন, 'উনি ঠিক বলেছেন। দেখুন কীভাবে ওই মহিলার সঙ্গে আচরণ করা হচ্ছে।' যে ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) থেকে ওই নেটিজেন রিটুইট করেছেন, তাতে দাবি করা হয়, এক বিধবা মহিলাকে মন্দিরে আরতি করতে দেওয়া হয়নি।