আইনের চোখে এটি পুরোদস্তুর অপরাধ। কিন্তু মানবিকতার নিরিখে একটি পুরোপুরি অপরাধ বলা যেতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। হালে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে দিল্লিতে। এক দলের চার সদস্য মিলে এক মাসে চুরি করেছেন ২০টি গাড়ি। এই পর্যন্ত কাজটি অপরাধই বটে। কিন্তু তার পিছনে কাজ করেছে যে উদ্দেশ্য তা রীতিমতো করুণ। কী সেই ঘটনা।
দিল্লি পুলিশের সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন দিল্লির আশিস ওরফে আসু। ২৯ বছরের আসুর চিকিৎসার জন্য দরকার বিপুল অর্থের কেমোথেরাপি থেকে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন— প্রতিটি কাজেই বিপুল টাকা খরচ হবে। আর সেই টাকা জোগাড় করতেই অপরাধের রাস্তা বেছে নেন তাঁর চার শাগরেদ।
আসুর এই চার শাগরেদের মধ্যে একজন তাঁর তুতো ভাই লাকি। বাকি তিন জন হলেন সাফিক, মাজিল আলি এবং রাম সঞ্জীবন। এই তিন জন মিলে দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে এক মাসের মধ্যে প্রায় ২০টি গাড়ি চুরি করেছেন।
তবে এই তিন জনের বিরুদ্ধেই এর আগে নানা ধরনের অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। গাড়ি চুরির অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে। গাড়ি চুরির পরে, সেগুলিকে ভেঙেচুরে তার অংশ বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে এই দলের বিরুদ্ধে। আর সেখান থেকেই পুলিশের সন্দেহ হয়। এক মাসের মধ্যে এই বিপুল পরিমাণে গাড়ি চুরির কারণে বিষয়টি আরও বেশি করে পুলিশের নজরে আসে। আর তদন্ত চালিয়ে পুলিশ হাতেনাতে ধরতে পারে এই চার জনকে।
তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, হাসপাতালে থাকা আশিসকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাঁর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আপাতত তাঁকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়েছে। গত ৬ বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত আশিস। তাঁর বর্তমান অবস্থাও বেশ খারাপ। খুব দ্রুত তাঁকে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়মমাফিক চলছে কেমোথেরাপি। দুটো মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষের বেশি খরচ হতে পারে। আর সেই টাকা জোগাড় করতেই দলের বাকিরা শেষ পর্যন্ত গাড়ি চুরির রাস্তাতেই নেমেছেন।
তবে এর বাইরে এই দলে আরও কয়েক জন আছেন বলেও ধারণা পুলিশের। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁরা। অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আর দ্রুত দলের বাকিদের ধরতে পারা যাবে বলে মনে করছেন পুলিশ অফিসাররা।