সাংবাদিক তথা সমাজসেবক গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ৮ জনকে সম্প্রতি জামিন দেওয়া হয়েছে। জামিন পাওয়া ২ ব্যক্তিকে নিজেদের গ্রামে বীরের মতো বরণ করে নেওয়া হল মালা এবং উত্তরীয় পরিয়ে। সেই ঘটনার ভিডিয়ো এবং ছবি ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। উল্লেখ্য, গত বুধবার বেঙ্গালুরু দায়রা আদালতে জামিন পায় গৌরী হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত পরশুরাম ওয়াঘমারে, মনোহর যাদভে, রাজেশ বাঙ্গেরা, বাসুদেব সূর্যবংশী, ঋষিকেশ দেবদেকর, গণেশ মিসকিন এবং অমিত রামচন্দ্র বাদ্দি। এর আগে গত জুলাই মাসে এই মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছিল অমিত দিগ্বেকর, এইচএল সুরেশ ও কেটি নবীন কুমারকে। এই নিয়ে খ্যাতনামা সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে মোট ১৮ জন অভিযুক্তই জামিন পেয়ে গেলেন।
বুধবার জামিন পাওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে থেকে পরশুরাম ওয়াঘমারে, মনোহর যাদভেকে গলায় মালা ও উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় তাদের এলাকাতে। ১১ তারিখ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বিজয়পুরায় নিজেদের এলাকায় ফেরে পরশুরাম ওয়াঘমারে, মনোহর যাদভে। তাদের সেখানেই সংবর্ধনা দেয় স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী। দুই অভিযুক্তকে মিষ্টি খাইয়ে বীরের সম্মান জানানো হয়। এই আবহে অভ্যর্থনার আয়োজনকারীদের দাবি, হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর সদস্য বলেই ৭ বছর জেলে রাখা হয়েছিল তাদের। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল এই দুই জনকে।
প্রঙ্গত, ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুর আরআর নগরের বাড়ির সামনে গৌরী লঙ্কেশকে গুলি করে হত্যা করেছিল দুষ্কৃতীরা। বাইকে চেপে এসেছিল বন্দুকবাজরা। সেই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। পরে ঘটনার তদন্তের জন্য সিট গঠন করা হয়েছিল। মোট ১৮ জনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল। সেই তালিকায় মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল অমল কালে নামক এক ব্যক্তিকে। আর পুলিশের দাবি ছিল, হামলাকারী দু'জন ছিল পরশুরাম ওয়াঘমারে ও গণেশ মিসকিন।
এই আবহে কীভাবে অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর করল আদালত? এই নিয়ে বেঙ্গালুরু দায়রা আদালতের বিচাররকের সাফ বক্তব্য, বিচারে বিলম্ব ঘটায় জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন, চার্জশিট অনুযায়ী ৫২৭ জন সাক্ষী রয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৪০ জন সাক্ষীকে জেরা করা হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে বিচার শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই তাদের মক্কেলদের যেন জামিন মঞ্জুর করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই জামিন মঞ্জুর হয় অভিযুক্তদের।