মার্কিন মুলুকে আইনি জটিলতায় ফেঁসেছেন ভারতের ধনকুবের গৌতন আদানি। এই আবহে এবার আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন বিচার বিভাগের তদন্তকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন সেই দেশের রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য লান্স গুডেন। এই আবহে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ডকে চিঠি পাঠান লান্স। তাতে তিনি প্রশ্ন করেন, 'যদি ভারত আদানির প্রত্যর্পণের আবেদন খারিজ করে, তাহলে আমেরিকা কী করবে?' পাশাপাশি তিনি চিঠিতে অভিযোগ করেন, বেছে বেছে এমন সব বিদেশিদের কেন নিশানা করা হচ্ছে যার জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে। এর সঙ্গে জর্জ সোরোসের যোগেরও উল্লেখ করেন লান্স। (আরও পড়ুন: 'ওরা চায় ভারত আক্রমণ করুক', বাংলাদেশে ভোট না করাতে ষড়যন্ত্র মহম্মদ ইউনুসের?)
লান্স লেখেন, 'বিচার বিভাগ যেভাবে বেছে বেছে পদক্ষেপ করছে তাতে ভারতের মতো মার্তিন পার্নারের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে। যে সব মামলা আমেরিকার ওপর প্রভাব ফেলবে না, সেই সব মামলা ছেড়ে দিয়ে বিচার বিভাগের উচিত দেশের অভ্যন্তরে থাকা দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করা। হিংসাত্মক অপরাধ, চিনের হস্তক্ষেপের মতো ইস্যু ছেড়ে এমন ব্যক্তির পিছনে যাওয়া হয়েছে, যিনি কি না এই দেশে অনেক বিনিয়োগ করেন। এর জেরে ভবিষ্যতে অন্যান্য বিনিয়োগকারীরা আমেরিকায় আসতে ভয় পাবেন।' (আরও পড়ুন: OpenAI CEO স্যাম অল্টম্যানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ বোনের, জবাব দিল পরিবার)
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ হবে ২০০ কোটি টাকা, চাকরি পাবেন হাজার হাজার মানুষ
এদিকে সম্প্রতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে একই সঙ্গে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি মামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট জজ নিকোলাস জি গারাফিস। উল্লেখ্য, আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি সহ মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল ঘুষ কাণ্ডে। তার মধ্যে মার্কিন মুলুকে মামলায় তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে গৌতম আদানি, সাগর আদানিদের বিরুদ্ধে। (আরও পড়ুন: কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সাথে মিলবে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, কতদূর হল কাজ?)
আরও পড়ুন: হলুদ ট্যাক্সি নামক 'নস্টালজিয়া' বাঁচিয়ে রাখতে সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক, মন্ত্রী বললেন…
মামলার প্রেক্ষিতে অভিযোগ, বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্রপ্রদেশ সহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিক, জনপ্রতিনিধিদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিল আদানি গ্রিন এনার্জিস। এই সংক্রান্ত তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার ন্যায়বিচার দফতর এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ফৌজদারি এবং দেওয়ানি আইনের আওতায় মামলা করে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাক্টিসেস আ্যাক্টে মামলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতারণার মামলাও হয়েছে। এর পাশাপাশি শেয়ার এবং ঋণপত্রে টাকা তোলার ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগেও দেওয়ানি মামলা হয়েছে আদানি গ্রিনের বিরুদ্ধে। (আরও পড়ুন: সোমনাথের স্থানে এবার ইসরো প্রধান হচ্ছেন নারায়ণন, এই বিশিষ্ট বিজ্ঞানী কে?)
উল্লেখ্য, ভারতের সরকারি আধিকারিকদের ২৬.৫ কোটি ডলারের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে আদানি এবং আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা এবং কর্মকর্তাদের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ এবং মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। তবে আদানি গোষ্ঠী নিজেদের ফাইলিংয়ে দাবি করেছিল, ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানির নাম নেই। সেই অভিযোগে অভিযুক্ত আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের এক কর্তা এবং এক কানাডিয়ান বিনিয়োগকারী। (আরও পড়ুন: পাসপোর্ট বাতিল বাংলাদেশের, আর ভারত নাকি বাড়িয়েছে হাসিনার ভিসার মেয়াদ: রিপোর্ট)
আরও পড়ুন: ১৪ বছর আগে কাঁটাতারে ঝুলে মৃত্যু বাংলাদেশি নাবালিকার, মা বললেন - 'ভারতকে যেন…'
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, আদানি নাকি ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল। ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬.৫ কোটির ডলারেরও বেশি ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের লাভজনক চুক্তি পেয়েছিল আদানি। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়। যদিও এই সব অভিযোগই অস্বীকার করে আদানি গোষ্ঠী। আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল তারা। এরই মাধ্যমে আমেরিকা এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে তারা টাকা তুলেছিল বাজার থেকে। দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী।