বৃহস্পতিবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ঘোষণার পরেও বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। গাজা সিটিতে 'তীব্র বিমান হামলার' দাবি করে সংস্থাটির কর্মকর্তা মহম্মদ আল-মুঘাইর বলেন, 'গত রাতে গাজায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির রূপরেখা নিয়ে চুক্তির ঘোষণার পর থেকে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে, বিশেষ করে উত্তর গাজার এলাকায়।' এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইজরায়েল ও হামাস তাঁর পরিকল্পনার প্রথম ধাপে একমত হয়েছে।
গাজা চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, 'আমি গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, ইজরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে।' হামাস জঙ্গিদের আন্তঃসীমান্ত হামলার (২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা) দ্বিতীয় বার্ষিকীর একদিন পরে এই ঘোষণাটি করা হয়। গাজায় এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলি হামলায় ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করেছিল প্যালেস্তিনীয় জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। কয়েকশো মানুষকে অপহরণ করেও নিয়ে গিয়েছিল হামাসের জঙ্গিরা। এরপর থেকে ২ বছর ধরে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চলেছে ইজরায়েল। তাতে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু ঘটেছে। মৃতদের একটা বড় অংশ আবার শিশু। এর মাঝে গোটা মধ্যপ্রাচ্য অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। হিজবুল্লা এবং হুথি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গেও সংঘর্ষ হয় ইজরায়েলের। ইরানের সঙ্গেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল ইজরায়েল। তবে ফের একবার মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দু'বছর ধরে চলা সংঘাতে ইতি টানতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে মিলে সম্প্রতি ২০ দফার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিকল্পনার অধীনে হামাসের হাতে বন্দি থাকা সকল মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। ভবিষ্যতে গাজায় কোনও ভূমিকা থাকবে না এই জঙ্গি গোষ্ঠীর। বিনিময়ে ইজরায়েল প্রায় ২ হাজার প্যালেস্তিনীয় বন্দিকে মুক্তি দেবে। আর তারা গাজা দখল করবে না। তবে একটি বাফার জোন তৈরি করা হবে গাজার চতুর্দিকে। জানা গিয়েছে, এই চুক্তি সই করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের হাতে আটক থাকা সকল বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইজরায়েলও প্যালেস্তিনীয় বন্দিদের ছেড়ে দেবে। হামাস এই চুক্তি মেনে নেওয়ার খবর সামনে আসতেই ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এদিকে শোনা যাচ্ছে, এই চুক্তি স্বাক্ষরের আবহে ট্রাম্প ইজরায়েল সফরে যেতে পারেন।