সৌজন্যের রাজনীতির জন্য এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিচিত ছিল। 'কিন্তু রাজনৈতিক বিভেদ এখন যেন চরমে পৌঁছেছে,' রবিবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এমনটাই বললেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ।
রবিবার সকালের অনুষ্ঠানে কথায় কথায় তাঁর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার বন্ধুত্বের কথা উঠে আসে। তাঁদের বন্ধুত্ব ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল, সে বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। এর উত্তরে জর্জ বুশ জানান, 'আমি স্তম্ভিত!'
বেশ কিছু অনুষ্ঠানে জর্জ বুশ ও মিশেল ওবামার বন্ধুত্ব ধরা পড়ে ক্যামেরায়। ন্যাশানাল মিউজিয়াম অফ আফ্রিকান আমেরিকান হিস্টোরি অ্যান্ড কালচারে জর্জ বুশকে আলিঙ্গন করেন মিশেল। সেই সময় ক্যামরাবন্দি হয় তাঁদের বন্ধুত্বের এই সুন্দর মুহূর্ত। শুধু তাই নয়, জর্জ বুশের বাবার অন্ত্যেষ্টির সময়েও পাশে ছিলেন মিশেল ওবামা। সেই সময়েও তাঁকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা যায়।
তবে একজন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানের মধ্যে এই বন্ধুত্ব ও সৌজন্যবোধ যেন হজম হয়নি অনেকেরই। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যম- সর্বত্র তাঁদের বন্ধুত্ব ঘিরে ওঠে সমালোচনার ঝড়। বুশ জানান, সাধারণ নাগরিকের মনে রাজনৈতিক মতভেদ, বিবাদের প্রভাব যে কতটা পড়েছে, এর থেকেই তার আন্দাজ মেলে।
‘আমরা গাড়িতে উঠলাম আর আমার মেয়ে জানাল যে আমি নাকি টুইটারে ট্রেন্ডিং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি আমার ও মিশেলের বন্ধুত্বকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আমার মনে হয়, ওঁদের মনে বিভেদ এতটাই ঢুকে গিয়েছে যে আমাদের সবকিছুর ঊর্ধ্বে দু'জনকে বন্ধু হিসেবে ভাবতে কষ্ট হচ্ছে।'
সম্প্রতি এই নিয়ে মুখ খোলেন মিশেল ওবামাও। তিনি বলেন, 'আমরা হয়তো ভিন্ন নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু আমরা একটা ক্ষেত্রে একইরকম- আমরা মনুষ্যত্বে বিশ্বাসী। আমরা ভালবাসা ও সহমর্মিতায় বিশ্বাস করি... আমরা সকলেই মনে হয় তাই করি। আমি ওঁর(জর্জ বুশ) বাবার অন্ত্যেষ্টিতে পাশে বসার সুযোগ পেয়েছিলাম। জীবনের চড়াই-উতরাই- সবই শেয়ার করেছি আমরা। শুধু তাই নয়, আমাদের সন্তান ও মা-বাবার বিষয়েও গল্প করেছি আমরা।'