বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > রাশিয়ার ‘কৌশলগত দূর্নীতি' রুখতে পদক্ষেপ জার্মান সরকারের

রাশিয়ার ‘কৌশলগত দূর্নীতি' রুখতে পদক্ষেপ জার্মান সরকারের

প্রতীকী ছবি সৌজন্যে ডয়েচে ভেলে

২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখল এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের উপর লাগামহীন হামলা চালানোর পরেও তিনি তার ‘বন্ধু' রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করেননি৷

‘কৌশলগত দূর্নীতি' রুখতে জার্মান সরকার রুশ রাষ্ট্রীয় সংস্থার পরিচালকমণ্ডলীতে ইইউ নাগরিকদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ঐকমত্য সম্ভব হলে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় এই পদক্ষেপ যোগ হতে পারে৷

বিষয়টি বেশ কিছুকাল ধরে দৃষ্টিকটু মনে হচ্ছিল, যদিও মূল সমস্যা নিয়ে তেমন খোলাখুলি তর্ক-বিতর্ক হয় নি৷ প্রাক্তন জার্মান চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার তার কার্যকাল শেষ হবার পর রাশিয়ার একাধিক রাষ্ট্রীয় সংস্থার পরিচালকমণ্ডলী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ ভূমিকা গ্রহণ করেছেন এবং বিশাল অংকের অর্থ উপার্জন করেছেন৷

২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখল এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের উপর লাগামহীন হামলা চালানোর পরেও তিনি তার ‘বন্ধু' রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করেননি৷ এমনকি নিজের দলে ও জার্মান রাজনীতি জগতে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েও তিনি অবিচল থেকেছেন৷ শেষ পর্যন্ত গত মে মাসে শ্র্যোডার রুশ জ্বালানি কোম্পানি ‘রসনেফ্ট'-এর পরিচালকমণ্ডলী থেকে সরে যাবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন৷

কিন্তু ঘটনা হল, শ্র্যোডারের মতো ‘হাই প্রোফাইল' রাজনৈতিক বা শিল্প-বাণিজ্য জগতের ব্যক্তিত্বকে ঘিরে দৃশ্যমান বিতর্ক চললেও জার্মানি তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি রাশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থায় মোটা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সক্রিয় থেকেছেন৷ এমনকি ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত কিছু এলাকায় তথাকথিত গণভোটের পর্যবেক্ষক হিসেবে এক জার্মান শিল্পপতির উপস্থিতি দেখা গেছে৷ এক আঞ্চলিক জ্বালানি কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে স্টেফান শালারের এমন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন' আচরণ নিয়ে জার্মানিতে তুমুল বিতর্ক চলছে৷

ভবিষ্যতে এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে জার্মান সরকার রাশিয়ার কোনও রাষ্ট্রিয় সংস্থার পরিচালকমণ্ডলীতে ইইউ নাগরিকদের উপস্থিতির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ একাধিক সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী রাশিয়ার উপর পরবর্তী ধাপের নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিও অন্তর্গত করতে চায় চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার৷ জার্মানির মতে, এর মাধ্যমে ‘কৌশলগত দুর্নীতি' বন্ধ করা সম্ভব হবে৷ কারণ রাশিয়া এতকাল এমন ‘চালের' মাধ্যমে ইইউ সদস্য দেশগুলির উপর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে এসেছে৷ অন্যান্য ইইউ দেশও জার্মান সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে একমত হলে এমন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব হবে৷

রাশিয়ার উপর পরবর্তী দফার নিষেধাজ্ঞার আওতায় আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-র সূত্র অনুযায়ী জার্মান সরকার রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানির উপর জি-সেভেন গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত আর্থিক সীমা কার্যকর করতে চায়৷ তাছাড়া রাশিয়ার কোনো কোম্পানির সঙ্গে পরমাণু জ্বালানির ক্ষেত্রে সহযোগিতার উপর নিষেধাজ্ঞা দেখতে চায় বার্লিন৷ ইইউ দেশগুলিতে রুশ নাগরিকরা যাতে আর সম্পত্তি কিনতে না পারে, সেটাও নিশ্চিত করতে চায় জার্মানি৷ ইইউ-র ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পত্তি জব্দ করার তালিকায় আরও রুশ নাগরিকের নাম অন্তর্গত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ সপ্তাহান্তে ইইউ পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার খসড়া নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনার পর আগামী বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা৷

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)

বন্ধ করুন