নতুন করে লকডাউন এড়াতে জার্মানিতে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ ও অন্যান্য পদক্ষেপ সম্পর্কে জল্পনা চলছে৷ আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্তের আশা করা হচ্ছে৷ কয়েকটি রাজ্য আগেই কড়া ব্যবস্থা চালু করছে৷
জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার লাগাতার বেড়ে চলায় ঠিক সময়ে জোরালো পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সরকার ও প্রশাসনের উপর চাপ বাড়ছে৷ জনসংখ্যার ‘মাত্র' ৬৭ শতাংশ করোনা টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পাওয়া সত্ত্বেও প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে গড় আক্রান্তের সাপ্তাহিক হার এরই মধ্যে ১৫০ পেরিয়ে গিয়েছে৷ নতুন করে লকডাউন এড়াতে তাই নানা পদক্ষেপ নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছে৷ জার্মানির কয়েকটি রাজ্যে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বিশেষ করে সুযোগ সত্ত্বেও টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষের উপর কড়া বিধিনিষেধ চাপানো হচ্ছে৷ হাসপাতালের উপর চাপ বাড়ার কারণেও কয়েকটি রাজ্য কড়া পদক্ষেপ করছে৷
ইজরায়েলের অভিজ্ঞতার নিরিখে জার্মানিতেও ১২ বছরের বেশি বয়সের সব মানুষের জন্য করোনা টিকার বুস্টার ডোজের ব্যবস্থা করার পক্ষে সওয়াল করছেন কয়েকজন বিশেষজ্ঞ৷ বিশ্ব চিকিৎসক সংগঠনের প্রধান ফ্রাঙ্ক উলরিশ মন্টগোমারি বলেন, যাঁরা ছয় মাসের আগে করোনা টিকার সব ডোজ পেয়ে গিয়েছেন, তাঁদের দ্রুত বুস্টার ডোজ নেওয়া প্রয়োজন৷ তিনি নতুন এক প্রচার অভিযানের মাধ্যমে সব ধরনের মানুষের মাঝে করোনা টিকার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির পক্ষে সওয়াল করেন৷
বুধবার বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান ও রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান লোটার ভিলার এ বিষয়ে বক্তব্য রাখছেন৷ জার্মানির টিকা কমিশন আপাতত শুধু ৭০ বছরের বেশি বয়সি ও বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য বুস্টার ডোজের পরামর্শ দিলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সবার জন্য সেই সুযোগের উল্লেখ করে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, সে বিষয়েও নিষ্পত্তির প্রয়োজন৷ স্পান নিজে ৬০ বছরের বেশি সব মানুষের জন্য বুস্টারের পক্ষে৷ টিকা কমিশন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বুস্টার ডোজের প্রশ্নে নতুন পরামর্শ দেবে বলে জানিয়েছে৷
আবার বড় আকারে টিকাদান কর্মসূচি চালু করতে হলে সদ্য বন্ধ হওয়া টিকাদান কেন্দ্রগুলি চালু করা হবে, নাকি ডাক্তারের চেম্বারেই মানুষ টিকা নিতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ ডাক্তারদের সংগঠন বছরের শেষ হওয়ার আগে চেম্বারে প্রথমে শুধু ৭০ বছরের বেশি বয়সিদের টিকার ব্যবস্থা করতে পারবে বলে জানিয়েছে৷ দেড় কোটি ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখছে না সংগঠন৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে এখনও পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷
চলতি সপ্তাহের শেষে ফেডারেল ও রাজ্যস্তরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন৷ জার্মানির বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সম্ভবত আগামী সপ্তাহে করোনা সংকট নিয়ে আলোচনা করবেন৷ করোনা টিকা সংক্রান্ত নীতি ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রশ্নে পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে স্পষ্ট পদক্ষেপ নেবার চেষ্টা করবেন তাঁরা৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)