অক্টোবরের মধ্যে করোনাভাইরাস টিকার প্রয়োজনীয় ডোজ না নিলে জার্মানির প্রায় সব মানুষকে করোনা টেস্টের জন্য মাসুল দিতে হবে৷ এমন কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে মহামারীর চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলা করতে চায় সরকার৷
আর মাত্র দুই মাস৷ তারপর জার্মানিতে করোনা টেস্ট করাতে হলে সুযোগ সত্ত্বেও টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষদের নিজের পকেট থেকেই টাকা খরচ করতে হবে৷ সংক্রমণের গড় হার ৩৫ পেরিয়ে গেলেই ২৩ অগস্টের পর দোকান-বাজার, হোটেল-রেস্তোরাঁ, সেলুন, জিম ইত্যাদি বদ্ধ জায়গায় প্রবেশ করতে হলে টিকার দুটি ডোজ, করোনা নিরাময় অথবা নেগেটিভ করোনা পরীক্ষার প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হবে৷
মঙ্গলবার চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ ফলে ১১ অক্টোবর থেকে শুধু যাঁরা স্বাস্থ্যগত কারণে টিকা নিতে অক্ষম ও যাঁদের বয়স ১৮ বছরের চেয়ে কম তাঁরাই বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা করাতে পারবেন৷ ২৪ ঘণ্টা মেয়াদের অ্যান্টিজেন টেস্ট অথবা ৪৮ ঘণ্টা মেয়াদের পিসিআর টেস্ট করতে হলে বাকিদের জন্য আর সরকারি ভর্তুকির সুযোগ থাকবে না৷ বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরা ও দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মও চালু থাকছে৷ এভাবেই শীতের মাসগুলিতে করোনা মহামারীর চতুর্থ ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে চায় জার্মান সরকার৷
এখনও পর্যন্ত জার্মানিতে শুধু সংক্রমণের গড় হার নির্দিষ্ট মাত্রা পেরোলে টিকাপ্রাপ্ত, করোনাজয়ী অথবা নেগেটিভ করোনা টেস্টের প্রমাণ দেখিয়ে বদ্ধ জায়গায় প্রবেশ করার নিয়ম রয়েছে৷ মের্কেল বলেন, সবার জন্য করোনা টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ স্বাস্থ্য ও বয়সের কারণে যাঁদের পক্ষে টিকা নেওয়া সম্ভব নয়, তাঁদের জন্য বিনামূল্যে টেস্টের ব্যবস্থাও থাকছে৷ অর্থাৎ জনসাধারণের সুরক্ষার সব ব্যবস্থা দিচ্ছে সরকার৷' মের্কেল আরও বলেন, ‘লকডাউনের প্রয়োজন হলেও করোনা টিকাপ্রাপ্তরা সম্ভবত তার আওতার বাইরে থাকবেন৷ তিনি কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনা টিকা দেবার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে চান৷’ উল্লেখ্য, বর্তমানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫ শতাংশ টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পেয়ে গিয়েছেন৷ কিন্তু টিকাদান কর্মসূচির গতি অনেক কমে গছে৷ গ্রীষ্মের ছুটির পর সেই গতি আবার বাড়বে বলে মের্কেল আশাপ্রকাশ করেন৷
জার্মানিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার বুধবার ২৫ পেরিয়ে গেছে৷ এক মাস আগে সেই হার ছিল পাঁচেরও কম৷ সরকার এখনও এই ইনসিডেন্সের হিসেবকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চায়৷ কবে সেইসঙ্গে হাসপাতালের উপর চাপের মতো সূচকও গুরুত্ব দেওয়া হবে৷ করোনা সংকটের কারণে অর্থনীতির ক্ষতি সামলাতে জার্মানির সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলির মেয়াদ আরও বাড়ানো হচ্ছে৷ ফলে সেপ্টেম্বর মাসের পরেও অনেক কর্মীর বেতনের বড় অংশ সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে মেটানো হবে৷ ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানও সরকারি সাহায্য পাবে৷