অর্ধশতাব্দীর সম্পর্ক ছিন্ন করলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ গুলাম নবি আজাদ। ছেড়ে দিলেন কংগ্রেস। বিদায়বেলায় একেবারে সরাসরি কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীকে 'শিশুসুলভ', 'অপরিণত' বলে আক্রমণ শানালেন। ঘুরিয়ে কিছুটা নিশানা করলেও কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর মোটের উপর প্রশংসা করলেন।
শুক্রবার কংগ্রেসের যাবতীয় পদ ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি শতাব্দীপ্রাচীন রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক সদস্যপদও ত্যাগ করেন গুলাম। সেইসঙ্গে সোনিয়াকে লেখা পাঁচ পৃষ্ঠার চিঠিতে গুলাম জানিয়েছেন, 'একরাশ কষ্ট চেপে' শতাব্দীপ্রাচীন দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেইসঙ্গে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা জানিয়েছেন, 'ভারত জোড়ো যাত্রার' আগে ‘কংগ্রেস জোড়ো যাত্রা’ করা উচিত।
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিনিধি ছিলেন। যে গোষ্ঠীর নেতারা কংগ্রেসের অভ্যন্তরে আমূল পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন। তবে তাঁদের 'প্রতিবাদে' কার্যত কোনও লাভ হয়নি। গুলাম অভিযোগ করেন, রাহুল কংগ্রেসের সভাপতি (২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন) হওয়ার পর সব বর্ষীয়ান নেতাদের কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছিল এবং 'একদল অনভিজ্ঞ তল্পিবাহকরা (পড়ুন রাহুলের গুণগান করা নেতারা) দলের কাজকর্ম চালানো শুরু করেছিলেন।'
শুধু সভাপতি হওয়ার পর নয়, ইউপিএ আমলেও রাহুলের ব্যবহারের তুমুল সমালোচনা করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়া অর্ডিন্যান্স যেভাবে ছিঁড়ে দিয়েছিলেন, তাতে কংগ্রেসের নেতার 'অপরিণতবোধ' ফুটে উঠেছিল। গুলামের কথায়, 'ওই শিশুসুলভ আচরণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের কর্তৃত্ব সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেিল। অন্য কিছুর তুলনায় ওই একটা কাজই ইউপিএ সরকারের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল।'
সেখানেই থামেননি গুলাম। কড়া ভাষায় তিনি দাবি করেন, রাহুলের তল্পিবাহকদের অধীনে ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে যায় কংগ্রেসের। ভারতের অধিকারের লড়াইয়ের ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে শতাব্দীপ্রাচীন দল। তিনি বলেন, ‘সবথেকে জঘন্য বিষয় হল যে রিমোট কন্ট্রোল মডেলে ইউপিএ সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক অখণ্ডতা বিনষ্ট করে দিয়েছিল। যে মডেল এখন সর্বভারতীয় কংগ্রেসে প্রয়োগ করা হচ্ছে।’ সেইসঙ্গে পরামর্শের সুরে রাজ্যসভায় প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা বলেন, 'তাই ভারত জোড়ো যাত্রা শুরুর আগে দেশজুড়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের কংগ্রেস জোড়ো কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত।'