তরুণীকে যৌন নির্যাতন এবং ব্ল্যাকমেলের অভিযোগ উঠল পিসের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে জীবন শেষ করে দিল তরুণী। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বেঙ্গালুরুতে। মৃত তরুণী একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। ঘটনায় তরুণীর অভিযুক্ত পিসেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
আরও পড়ুন: কীভাবে শান্তিতে মৃত্যুবরণ করা যায়? নেটে সার্চ করেছিল IIT-র ছাত্র, দাবি পুলিশের
তরুণীর মায়ের দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত তার বড় মেয়ের নগ্ন ছবি এবং ভিডিয়ো দিয়ে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেল করেছিল। তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেয়েছিল তাঁর কাকা। শুধু তাই নয়, শারীরিক সম্পর্ক করতে না দিলে সেগুলি ফাঁস করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছিল তাঁর পিসে। জানা যাচ্ছে, তরুণী গত ৬ বছর ধরে থিরুমলাশেট্টিহাল্লিতে তাঁর দাদুর বাড়িতে থাকছিলেন। তিনি বেশিরভাগ অবসর সময়ে পিসের পরিবারের সঙ্গে কেআর পুরমে তাদের অ্যাপার্টমেন্টে কাটাতেন। সম্প্রতি তিনি তাঁর পিসে এবং স্ত্রীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ১২ জানুয়ারি তরুণীর মা জানতে পারেন তিনি পুড়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তখন হাসপাতালে পৌঁছন তরুণীর মা।
পরের দিন সকালে, তরুণীর এক বন্ধু তাঁর মাকে জানান, তিনি পিসের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন। অভিযুক্ত ফোনে তরুণীর নগ্ন ছবি এবং ভিডিয়ো দেখিয়ে হয়রানি করছিল। তরুণীর বন্ধু আরও জানান, এরজন্য তিনি আত্মহত্যার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। যদিও তিনি তাকে এই ধরনের চরম পদক্ষেপ না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত তরুণীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কুন্ডলাহল্লি মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি হোটেল রুম বুক করেছিল। সেখানে যাওয়ার পথে তরুণী পেট্রোল কিনে হোটেলে প্রবেশ করে। এরপর পিসের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। অভিযুক্তের হাতও পুড়ে গিয়েছিল। তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে, জানা যায়, তরুণীর পিসে পরিবারকে বলেছিলেন সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন তিনি। তবে তরুণীর পিসের পোড়া হাত দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। ঘটনায় হোয়াইটফিল্ড থানায় অভিযোগ জানান পরিবারের সদস্যরা।
পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত স্বীকার করে যে তরুণী হোটেলের ঘরে তার সঙ্গে দেখা করতে এসে আত্মহত্যা করে। একজন পুলিশ অফিসার জানান, অভিযুক্তের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সে হয়রানির কথা স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পেনড্রাইভটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তের স্ত্রীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সবকিছু খতিয়ে দেখছে।