ছোটবেলায় হারিয়েছিলেন দুটি হাতের তালু। তবে মনের জোর হারাননি তিনি। পড়াশুনো শেষ করে সরকারি আধিকারিক হিসাবে প্রবেশ করেন পেশাদারী জীবনে। অবশেষে জীবনসঙ্গী বেছে নিলেন বাংলাদেশের বরিশাল জেলার ফাল্গুনি সাহা। শহরের শংকর মঠে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে ফাল্গুনি বলেন, ‘নিজেকে কখনও দুর্বল মনে করিনি।’
২০০২ সালে ছাদে খেলতে খেলতে তড়িদাহত হন ফাল্গুনি। বাদ যায় তাঁর ২টি হাতের তালু। তখন তাঁর বয়স ৫। তার পর হাত ছাড়াই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ২০১৮ সালে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশবিদ্যায় স্নাতক হন। এর পর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। চাকরিতে যোগ দেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ব্র্যাকের আধিকারিক হিসাবে।
বুধবার বিয়ের আসরে দাঁড়িয়ে ফাল্গুনি বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আর মানসিকতা ঠিক থাকলে প্রতিবন্ধকতা কোনও বিষয় নয়। আমাদের বিয়েটা দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে আশা করি। এই পর্যন্ত পৌঁছতে সবার আন্তরিকতা পেয়েছি। স্কুল থেকে কর্মজীবনে তাঁরা বুঝতে দেননি যে আমার ২টি হাত নেই। যার পক্ষে এমন বিয়ে সম্ভব নয় তার দূরে থাকাই ভালো।
পাত্র সুব্রত মিত্র বলেন, ফাল্গুনিকে ছোটবেলা থেকে চিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে ওর সঙ্গে ফেসবুকে কথা হতো। তখন ও বিয়ে-সংসার এসব নিয়ে ভাবতে পারত না। কিন্তু কারও হাত নেই বলে সে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে না এটা আমার মনে হয়নি। আমরা যেন ভালো থাকি, সবাই আশীর্বাদ করবেন।
অচেনা এই বিয়ে দেখতে বুধবার রাতে শংকর মঠে হাজির হন বহু মানুষ। ফাল্গুনির পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, দুই পরিবারের সহমতিতেই এই বিয়ে হয়েছে।