গোয়া পুলিশের তৎপরতায় কার্যত নরক যন্ত্রণা ভোগ করার হাত থেকে মুক্তি পেলেন এই বাংলার দুই তরুণী। অভিযোগ, তাঁদের জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ঘটনায় এক অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ার আরামবোল এলাকায়।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গোয়া পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া ওই দুই তরুণীর মধ্য়ে একজনের বয়স ২৫ বছর এবং অন্যজনের বয়স ৩৪ বছর। তাঁরা দু'জনেই আদতে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।
উত্তর গোয়ার পুলিশ সুপার অক্ষত কুশল এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে আরামবোল জংশনের কাছেই রুটিন টহলদারি চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই সময় একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে নারী পাচার সংক্রান্ত কিছু খবর আসে।
জানা যায়, শরমিন শেখ ওরফে মারিয়া নামে এক মহিলা গোয়ার বাইরে থেকে কিছু তরুণীকে ধরে এনেছে। ওই তরুণীদের জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানো হচ্ছে বলেও পুলিশের কাছে খবর আসে। তারা জানতে পারে, গ্রাহকদের কাছে মোটা টাকায় বিক্রি করার জন্য ওই তরুণীদের গোয়ায় ধরে আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই শরমিন শেখ ওরফে মারিয়া আদতে গোয়ার বাসিন্দা নয়। তার বাড়ি গুজরাতের আহমেদাবাদে।
পুলিশের সূত্র মারফত আরও জানা যায়, সম্প্রতি গোয়ার আরামবোল পার্কিং এরিয়ার কাছাকাছি কোনও একটি জায়গা থেকে এই সেক্স ব়্যাকেট চালাতে শুরু করেছে শরমিন।
এই খবর পাওয়ার পরই ওই তরুণীদের উদ্ধার করতে এবং শরমিনকে পাকড়াও করতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। শুরু হয় অভিযান।
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পুলিশ সুপার জানান, 'আমরা এই খবর পাওয়ামাত্রই ওই এলাকায় অভিযান চালাই। আমাদের সঙ্গে এআরজেড এনজিও-র প্রতিনিধিরাও ছিলেন। গোয়ার পেরনেম এলাকার আরামবোলের হোটেল লক্ষ্মী হাউস থেকে ওই দুই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। তাঁরা দু'জনই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।'
এই ঘটনায় স্থানীয় মনদ্রেম থানায় এফআইআর করা হয়েছে। ১৯৫৬ সালের বেআইনি পাচার (প্রতিরোধী) আইনের ৪, ৫ এবং ৭ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে শরমিন শেখ ওরফে মারিয়াকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে এই ধারাগুলি প্রয়োগ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, আদতে আহমেদাবাদের বাসিন্দা হলেও ইদানীং শরমিন পেরনেমের এই আরামবোল এলাকাতেই ঘাঁটি গেড়েছিল। সে ধনী ক্রেতা ঠিক করে, তাদের কাছে তরুণীদের বিক্রি করত। নানাভাবে ওইসব তরুণীকে ধরে আনা হত এবং তারপর তাঁদের দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হত। এই ঘটনায় এখনও তদন্তের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।