ঘরোয়া বৈঠকে কি ফের একবার বিরাট ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিলেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই? এই প্রশ্ন উঠছে, কারণ সূত্রের দাবি, নয়া কিছু সিদ্ধান্তের জেরে বিপাকে পড়তে পারেন সংস্থার প্রায় ১০ শতাংশ আধিকারিক। বলা হচ্ছে, গুগলের তরফে তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে!
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি, ২০২৪) গুগলের কর্মী ও আধিকারিকদের নিয়ে একটি বড়সড় ঘরোয়া বৈঠক (টাউন হল) করেন সুন্দর পিচাই।
সেখানে সুন্দর পিচাই সংস্থার সাম্প্রতিক নীতিগুলি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মূলত গত দু'বছর ধরে গুগল নানা ধরনের পরিবর্তন করছে। যার নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য রয়েছে। যেমন - সংস্থার কর্মকাণ্ড আরও সহজ সরল করে তোলা। সেইসঙ্গে, সংস্থার কর্মক্ষমতা আরও বেশি নিপুণ ও নিখুঁত করে তোলা।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বুধবারের ওই টাউন হলে উপস্থিত ছিলেন, এমন দুই ব্যক্তি নাকি বাইরে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। যদিও নিজেদের পরিচয় প্রকাশ্য়ে আনেননি তাঁরা।
ওই দুই সূত্রের দাবি, গুগলের হয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করার অধিকার তাঁদের নেই। তাই নাম গোপন রাখার শর্তে সংশ্লিষ্ট ঘরোয়া বৈঠকের তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তাঁরা।
তাঁদের দাবি, বুধবারের বৈঠকে সুন্দর পিচাই তাঁর সহকর্মীদের উদ্দেশে জানান, গুগল কর্তৃপক্ষ স্থির করেছে যে সংস্থার একেবারে শীর্ষ স্থানে যে আধিকারিকরা রয়েছেন, তাঁদের সেই ভূমিকা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এর আওতায় পড়বেন সংস্থার ম্য়ানেজার, ডিরেক্টর এবং ভাইস প্রেসিডেন্টরা। সব মিলিয়ে পরিমাণটা প্রায় ১০ শতাংশ।
এই প্রেক্ষাপটে গুগলের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই নির্দিষ্ট ১০ শতাংশের মধ্যে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের একাংশের ভূমিকা স্থানান্তরিত করা হচ্ছে এবং একাংশকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত দু'বছর ধরেই সংস্থার কর্মপরিচালনার ক্ষেত্রে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছে গুগল কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুন্দর পিচাই বলেছিলেন, তিনি চান - সংস্থার কর্মদক্ষতা আরও অন্তত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাক। এবং তার ঠিক পরেই ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ব্যাপক ছাঁটাই করা হয়েছিল। যার জেরে চাকরি হারিয়েছিলেন প্রায় ১২,০০০ কর্মী।
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের ব্যাখ্য়া, আসলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতেই এই ধরনের পদক্ষেপ করছে গুগল। বিশেষ করে ওপেনএআই-এর মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর সংস্থাগুলি নিত্যনতুন পণ্য বাজারে এনে গুগলের আমদানিতে ভাগ বসাচ্ছে। ফলত, দক্ষতা বৃদ্ধির নামে ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে হচ্ছে গুগলকে।
ওপেনএআই-এর মতো সংস্থাগুলির সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থাকতে গুগল কর্তৃপক্ষও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়াচ্ছে। তারা তাদের মূল ব্যবসার মধ্যে এআই অন্তর্ভুক্ত করেছে। নতুন বিভিন্ন এআই ফিচার নিয়ে আসছে।
বুধবারের ওই বৈঠকে সুন্দর পিচাই কর্মীদের কাছে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তা হল - যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গুগলকেও আপডেট হতে হবে।