দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা বিশ্লেষণ করতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। জেল থেকে বেরিয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে এ ভাবেই তোপ দাগলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিক বৈঠকে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘যদি রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়াতেই ভুল থাকে, তাহলে প্রেসক্রিপশন কাজে দেবে না বরং প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াবে। চলতি অর্থবর্ষের ৭ মাস কেটে গেলেও বিজেপি সরকারের ধারণা, অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি চক্রাকারে আসে। সরকার তার সিদ্ধান্তে পুরোপুরি ভুল। ধারণা নেই বলেই সরকার ব্যর্থ।’
মোট ৯০০ শব্দের বিবৃতিতে চিদম্বরম আরও বলেন, ‘মানুষের কাছে অর্থ কম রয়েছে বলেই চাহিদায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে, কারণ সকলের মনে অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদা না বাড়লে উত্পাদন ও বিনিয়োগও বাড়বে না।’
চিদম্বরমের দাবি, এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। তবে কংগ্রেস প্রধান দফতরে তাঁর এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে কাশ্মীর পরিস্থিতি এবং উপত্যকার আটক নেতাদের নিয়ে বক্তব্য প্রকাশ করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা কখনও খণ্ডিত হতে পারে না। যদি আমরা নিজেদের স্বাধীনতা সংরক্ষণ করতে চাই, তাহলে ওঁদের মুক্তির জন্য আমাদের লড়তে হবে।’
জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার সময় সুপ্রিম কোর্ট চিদম্বরমকে তাঁ বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির মামলা সম্পর্কে প্রকাশ্যে বা সংবাদমাধ্যমে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আপরোপ করেছে। পোড়খাওয়া রাজনীতিক এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে তাই সেই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি। নিজের সম্পর্কে শুধু জানিয়েছেন, ‘আমার বিবেক সুস্পষ্ট রয়েছে।’
কেন্দ্র কি আর্থিক মন্দার সমাধান বের করতে পারবে? প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকারের সেই ক্ষমতা নেই। তবে আমাদের সুদিনের অপেক্ষায় থাকতে হবে।’
এরপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে চিদম্বরম বলেন, ‘অর্থনীতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী অস্বাভাবিক রকম চুপ। মন্ত্রীদের নিরন্তর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ও ভাষণ নিয়ে তিনি কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না। এর নিটফল দাঁড়িয়েছে যে, সরকার অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপের চূড়ান্ত অপদার্থ ম্যানেজার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
চিদম্বরমের দাবি, অর্থনৈতিক সমস্যার মূল বিষয়গুলি সরকারের অগোচরে থাকার কারণ জিএওসটি, নোটবন্দি, কর আতঙ্ক, রক্ষানীতি-সহ নিজের অজস্র পাহাড়প্রমাণ ভুল পদক্ষেপগুলির সত্যতা রক্ষা করতে ক্রমে অনড় ও কঠোর হয়ে পড়েছে প্রশাসন।