চিনের জলসীমায় দুটি বাণিজ্যতরীতে গত কয়েক মাস যাবৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ৩৯ জন ভারতীয় নাবিককে দেশে ফেরানোর বিষয়ে পদক্ষেপ করল ভারত।
বিচ্ছিন্ন ভারতীয় নাবিকরা অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা বয়ে আনা দুই জাহাজ এমভি জগ অনন্দ ও এমভি অ্যানাস্তাসিয়াতে আটকে রয়েছেন। ওই দুই জাহাজের মাল খালাস করার অনুমোদন দেয়নি চিনের বন্দর কর্তৃপক্ষ। মনে করা হচ্ছে, চিন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবনতির কারণেই অনুমোদন মেলেনি।
বিষয়টি আপাতত চিনের বিদেশ মন্ত্রক ও স্থানীয় প্রশাসনের বিচারাধীন। আটকে পড়া জাহাজ দুটিকে বন্দরে ভিড়তে দেওয়া এবং নাবিক পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব।
পণ্যবাহী জাহাজ এমভি জগ আনন্দ ২৩ জন ভারতীয় নাবিক-সহ গত ১৩ জুন থেকে চিনের হেবেই প্রদেশের জিংতাং বন্দরের কাছে নোঙর করে রয়েছে। অন্য পণ্যবাহী জাহাজ এমভি অ্যানাস্তাসিয়া গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে কাওফেইদিয়ান বন্দরের কাছে ১৬ জন ভারতীয় নাবিক-সহ থমকে রয়েছে।
অ্যানাস্তাসিয়া জাহাজ কর্তৃপক্ষ সমুদ্রে নাবিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। গত বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে অনুমোদন পেতে চিন সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে বেজিংয়ে ভারতীয় দূতাবাস।
গত নভেম্বর মাসের শেষে চিনা বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল যে, জিংতাং বন্দরে নাবিক পরিবর্তনের অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়। পরিবর্তে তিয়ানজিন বন্দরে নাবিক পরিবর্তনের অনুরোধখতিয়ে দেখা হবে বলেও মন্ত্রক জানায়। এই বিষয়ে জাহাজ সংস্থাগুলিকে আবেদন পাঠাতে বলাও হয়।
ভারতীয় নাবিকদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে গত কয়েক মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে চিনের উপ-বিদেশ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিশ্রি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দিল্লির চিনা দূতাবাের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, ভারতীয় নাবিকদের দুর্দশার জন্য জাহাজ সংস্থার কাঁধেই দোষ চাপিয়েছে চিনা দূতাবাস। তাঁদের দেশে ফেরার ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছে দূতাবাস। তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে জিংতাং ও কাওফেইদিয়ান বন্দরে নাবিক পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলেও দাবি করেছে চিনা দূতাবাস।