বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনি সঙ্কট বাড়তে শুরু করেছে তাঁর নিজ দেশেই। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর থেকেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার পাহাড় জমতে শুরু করেছে। হত্যা, অপহরণ-সহ একের পর এক মামলা রুজু হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান কী হতে চলেছে সে বিষয়টি স্পষ্ট করলেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ তৌহিদ হোসেন।
আরও পড়ুন: হাসিনার ছবি প্রচার করলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে, সংবাদমাধ্যমকে হুঁশিয়ারি BNP-র
বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনাকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তৌহিদকে। তার উত্তরে 'বিদেশমন্ত্রী; জানান, দেশটির স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তারপরে ভারত সরকারকে তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের বিষয়ে অনুরোধ করা হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এখনও পর্যন্ত এনিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেছেন, যে এই ধরনের পরিস্থিতি নয়াদিল্লির জন্য কূটনৈতিকভাবে ‘বিব্রতকর পরিস্থিতি’ তৈরি করবে। তবে তিনি এও জানিয়েছেন, ‘ভারত ভালো করেই এটি জানে। তবে আমি নিশ্চিত ভারত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টিকে বিবেচনা করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা সোমবার এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে দীর্ঘ সময় অবস্থান ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশটির সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলবে না। তৌহিদ বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি বড় বিষয়। বন্ধুত্ব পারস্পরিক স্বার্থের উপর ভিত্তি করে।’ সোমবার ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের পর ৫ অগস্ট হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং দেশ ছেড়ে ভারতে আসেন। ক্ষমতাচ্যুত নেত্রীর ওপরই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে ভারত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সম্প্রতি বলেছেন, যে শেখ হাসিনার পরিকল্পনার সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে কোনও আপডেট বিদেশমন্ত্রকের কাছে নেই।
তৌহিদ বলেন, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামি লিগের অন্যান্য সদস্যরা বাংলাদেশে দুটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত। পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলাও হয়েছে।