আচমকা ভারত পেঁয়াজের রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ। এই নিয়ে সরকারি ভাবে নালিশ ঠুকেছে ঢাকা। এরপরেই নড়েচড়ে বসে নয়াদিল্লি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যতটা পেঁয়াজের বরাত ইতিমধ্যেই নেওয়া আছে সেটা বাংলাদেশে যেতে দেওয়া হবে।
ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ও জোগানে কিছুটা কমতি দেখা দেওয়ায় সোমবার থেকে রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এরপর বাংলাদেশগামী পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক এখন পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে আটকে গিয়েছে।
এরপরেই বাংলাদেশে হুহু করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ভারতের রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রতিবাদ করে ভারতীয় হাই কমিশনকে নোট ভার্বাল পাঠায় বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রক। নয়াদিল্লি স্থিত বাংলাদেশী মিশনও এই বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে সূত্রের খবর।
কিছুদিন আগেই ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সুদৃঢ় করতে পড়শি রাষ্ট্রে গিয়েছিলেন বিদেশসচিব হর্ষ শ্রীঙ্গলা। তিনি নিজে এই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে অবশেষে সমাধানসূত্র বার করেছেন।
এদিন বাণিজ্যমন্ত্রক ও বিদেশমন্ত্রকের কর্তাদের মধ্যে এই সংক্রান্ত আলোচনা হয়ে। সেখানে ডিজিএফটি ইতিমধ্যেই আমদানিকারকরা যে সংখ্যক পেঁয়াজের অর্ডার দিয়ে ছিলেন, সেটাকে আটকে না রাখার নির্দেশ দেয়।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিশেষ সম্পর্কের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূ্ত্রের খবর। তবে এরপরে আরও পেঁয়াজ বাংলাদেশে রফতানি করতে দেওয়া হবে কি না, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই নিয়ে অল্পদিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বন্দ্ব লাগল ভারতের। গত বছর অক্টোবরে ভারতে এসে রসিকতার ছলে এই বিষয়টি উত্থাপন করেন শেখ হাসিনা। এরকম কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে সূচিত করে দিলে সুবিধা হবে বলেও জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের নোট ভার্বালে গভীর উদ্বেগ জানান হয় পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কারণ এতে বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর জোগানের ওপর প্রভাব পড়ে। গত দুই বছর ধরে দুই পক্ষের মধ্যে এই সংক্রান্ত যে আলোচনা হয়েছে, এটি তার পরিপন্থী বলেও দাবি করেছে বাংলাদেশ।
সূত্রের খবর, আচমকা এরকম পেঁয়াজ আমদানি দেশে বন্ধ হওয়ায় মুখ পুড়েছে শেখ হাসিনা সরকার, যেখানে বিরোধীরা বলছে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে কি লাভ। বাংলাদেশের যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় তার প্রায় ৯০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। গত বছরের মতো এবারও তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার কথা ভাবছে বাংলাদেশ।