'গিগ ওয়ার্কার'! আজকাল এই কথাটা প্রায়ই শোনা যায়। গোদা বাংলায় বললে, সেই লক্ষ লক্ষ কর্মীকে বোঝায়, যাঁরা কোনও মাসমাইনের চাকরি করেন না। বদলে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নানা ধরনের পরিষেবা দেন। তা তিনি কোনও ফ্রিল্য়ান্স রিপোর্টার হতে পারেন, কিংবা অ্য়াপভিত্তিক খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার ডেলিভারি পার্টনার। এবার এই গিগ ওয়ার্কারদের জন্যও এবার সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা পাকা করতে চলেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। কীভাবে?
কেন্দ্রীয় সরকার স্থির করেছে, ঠিক যেভাবে বেতনভুক কর্মীদের বেতনের একটা অংশ অবসরকালীন ভাতা বা ওই জাতীয় কোনও প্রকল্পের অধীনে কেটে সংশ্লিষ্ট খাতে জমা রাখা হয় এবং তাতে সুদ যুক্ত হতে থাকে, ঠিক একই ধরনের ব্যবস্থা করা হবে গিগ ওয়ার্কার বা অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্যও।
যে সংস্থায় কোনও কর্মী কাজ করবেন, সেই সংস্থাকেই বলা হবে যাতে তারা পারিশ্রমিকের একটা অংশ কেটে তা এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিম (ইপিএস)-এ জমা করে। এর ফলে একদিকে যেমন ভবিষ্যতে এই কর্মীরা আর্থিক সুরক্ষা পাবেন, তেমনই সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানও স্বীকৃত হবে।
এক্ষেত্রে অবশ্য কাজের জোগান দেওয়া সংস্থাগুলি যাতে ৩ থেকে ৪ শতাংশের বেশি পারিশ্রমিক কাটতে না পারে, সেটাও নিশ্চিত করবে কেন্দ্রীয় সরকার। টাকা কাটার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করা হবে।
উল্লেখ্য, আগে অসংগঠিত ক্ষেত্রের এই কাজগুলি শ্রম নীতির অধীনে সরাসরি আসত না। কিন্তু, বছর কয়েক আগে সেগুলিকে নীতির অধীনে আনা হয়। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত নয়া নিয়ম সেভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। কারণ, বহু রাজ্য়ের সরকারই বিষয়টি নিয়ে এগোয়নি।
এই গিগ ওয়ার্কাররা বেশি অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে অনেক সময়েই একসঙ্গে একাধিক সংস্থায় কাজ করেন। সেক্ষেত্রে যদি তাঁদের সকলের জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রভিনেন্ট ফান্ড সংস্থার ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার পক্ষেই সেখানে সামাজিক সুরক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দ অর্থ সহজে জমা করা সম্ভব হবে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, শ্রম মন্ত্রকের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, 'আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি এবং আমাদের আশা, খুব দ্রুত এই নয়া ব্যবস্থাপনা কার্যকর করতে পারব।'
একইসঙ্গে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গেও শ্রমিক নীতি কার্যকর করা নিয়ে কথা বলছেন। কারণ, এই নীতি দ্রুত কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি।