কাবাব দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। ক্রিকেট খেলেছেন। দেশে ফিরে তালিবানের ‘দুর্দান্ত কাজ’ নিয়ে একাধিকবার মুখ খুলেছেন তমাল ভট্টাচার্য। তা নিয়ে এবার সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনের কটাক্ষের মুখে পড়লেন শিক্ষক। প্রশ্ন করলেন, যে তালিবান মহিলাদের পাথর ছুড়ে হত্যা করেছে তাদের কীভাবে সমর্থন করছেন নিমতার ‘বাঙালিবাবু’?
মঙ্গলবার দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তসলিমা লেখেন, 'তমাল ভট্টাচার্য নামের এক বাঙালিবাবু আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি দেশে ফেরার সময় তালিবান জঙ্গিদের সামনে পড়েছিলেন। তিনি তালিবানের সুমধুর ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তাদের গুণগান গাইছেন এখন। তালিবান জঙ্গিরা ভোটে জিতে নয়, বন্দুকের নল ঠেকিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসেছে। জঙ্গিরা ১,৪০০ বছরের পুরনো শরিয়ত আইন জারি করবে, শরিয়ত আইন কীভাবে মেয়েদের পাথর ছুড়ে হত্যা করে, মেয়েদের বোরখার অন্ধকারে বন্দি করে, স্কুল কলেজে যাওয়ার, উপার্জন করার, স্বনির্ভর হওয়ার অধিকার ছিনিয়ে নেয়, বাঙালিবাবুটি নিশ্চয়ই জানেন, তারপরও কী করে তিনি বলেন নব্বই দশকের তালিবান আর এখনকার তালিবানে বিস্তর তফাৎ! তাদের ব্যবহারে তিনি তফাৎ দেখেছেন। কিন্তু যে শরিয়ত আইনের অধীনে দেশ শাসন করতে তারা বদ্ধপরিকর, সেই শরিয়ত আইন তো একই আছে - নব্বই দশকে যা ছিল, এখনও তো তাই। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, পুট ইয়রসেলফ ইন মাই সুজ। তোমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে বলে তালিবান ভালো? তারা অন্যের সঙ্গে কী ব্যবহার করছে, তা দেখে তো তাদের সম্পর্কে রায় দিতে হবে! আফগান মেয়েরা যদি বলে আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে তালিবানদের সম্পর্কে মন্তব্য কর, তাহলে? তমাল যদি বাঙালি বাবু না হয়ে কোনও স্বাধীনচেতা আফগান মেয়ে হতেন, যে মেয়ে বোরখা বা হিজাবের শৃঙ্খল পছন্দ করেন না, তমাল ভট্টাচার্যের মতোই আন্তর্জাতিক ইস্কুলে শিক্ষকতা করতে চান, স্বর্নিভর হতে চান, তাহলে?'
দিনকয়েক আগে কাবুল থেকে কলকাতায় ফিরেছেন তমাল। বিমানবন্দরে নেমেই তিনি বলেন, কাবুলে কোনও সমস্যা নেই। সব দোকানপাট। ‘বরং আমরা দেখেছি, আগে আমরা ১৫০ টাকা দিয়ে কাবাব খেতাম, নান-কাবাব। তার মাংসের পরিবার ডবল হয়ে গিয়েছে।’ তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চূড়ান্ত ট্রোলের মুখে পড়েন। তারপরও তমাল বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছে। চা খেয়েছে।’