বিগত দিনে জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে একাধিক কটাক্ষ এবং রাজনৈতিক আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। এই আবহে চলতি বাজেট অধিবেশনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করলেন, পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। তাঁর কথায়, জিএসটি চালুর পর থেকে এমন একটি আইটেমও নেই যাতে জিএসটি হার বাড়ানো হয়েছে। নির্মলা সীতারামন বরং বলেন যে বিগত দিনে জিএসটি হার কমিয়ে আনা হয়েছে। নির্মলার দাবি, গড় জিএসটি হার ১৫.৮ শতাংশ (জিএসটি চালুর সময়) থেকে ১১.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। (আরও পড়ুন: বাংলায় ডিএ বাড়ে ‘মাঝে মাঝে’, তাতে সরকারের 'সাশ্রয়' ২.১৯ লাখ কোটি টাকা!)
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের মাথায় পড়বে হাত? গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর এল বড় খবর
নির্মলা বলেন, 'এই জিএসটির হারে হ্রাসের সিদ্ধান্ত জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকেই নেওয়া হয়েছে। তাই আমি আবেদন করছি, নিজের নিজের রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের জিজ্ঞেস করুন যে জিএসটি কাউন্সিলে কী হয়। আর আমি সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁরা ধরে ধরে একেকটা আইটেম খতিয়ে দেখেছেন কোথায় জিএসটির হার কমানো যায়।' (আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে 'তামাশা' না করতে বলে বিতর্কে ইউনুস সরকারের উপদেষ্টা)
আরও পড়ুন: দেবের প্রশ্নে BGB-র কাণ্ডকারখানা নিয়ে কথা উঠল সংসদে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বললেন…
এদিকে বাজেট বক্তৃতার জবাবি আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সাম্প্রতিককালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা সংসদে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেছিলেন, নির্মলা সীতারমনের বাজেটে বাংলার জন্যে কিছু নেই। তার পালটা জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, 'অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও ২০১৬-১৭ সাল থেকে পিএম আবাস যোজনা গ্রামীণ প্রকল্প চালু হয়েছিল। সরকার কেন্দ্রীয় অংশীদারিত্বের টাকা হিসেবে ২৫৭৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত। ব্যাপক অভিযোগ এসেছে দুর্নীতির। সরকারি নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। অযোগ্যদের টাকা দেওয়া হয়েছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেও এই একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রক এর জন্যে রাজ্য সরকারের কাছে বারবার জবাব চেয়েছে। নীচু স্তরের সাধারণ মানুষকে লুট করা হয়েছে। মনরেগায় প্রচুর ভুয়ো জবকার্ড তৈরি করা হয়েছে। মিড ডে মিলে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। রেশন মাফিয়াদের দাপট চলেছে পশ্চিমবঙ্গে।'
নির্মলা সীতারামন আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়েও বাংলাকে তোপ দাগেন। অভিযোগ করেন, ইচ্ছে করে এই প্রকল্প বাংলায় কার্যকর হতে দেয়নি তৃণমূল সরকার। এদিকে কেন্দ্রের জল প্রকল্পের প্রসঙ্গ তুলে নির্মলা দাবি করেন, দেশ জুড়ে বর্তমানে নলবাহী পানীয় জল সরবরাহের হার ৭৪ শতাংশ। তবে পশ্চিমবঙ্গে তা মাত্র ৪৩ শতাংশ। নির্মলা এরপর ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে বাংলাকে খোঁচা দিয়ে বলেন, '১৯৪৭ সালে গোটা দেশে ২৪ শতাংশ শিল্প ছিল পশ্চিমবঙ্গের। যা এখন ৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে।' আর বর্তমানের পরিস্থিতি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'গত কুড়ি বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের মাথাপিছু রোজগারের হার দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক পিছনে রয়েছে। এখন পশ্চিমঙ্গ দেশের সব রাজ্যগুলির মধ্যে ২৩তম স্থানে রয়েছে।'