বিধানসভা নির্বাচনের বছরখানেক আগেই ইস্তফা দিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব পালটায়।’
কিন্তু বিধানসভা ভোটের বছরখানেক আগে কেন ৬৫ বছরের রুপানিকে সরিয়ে দেওয়া হল?বিজেপি সূত্রে খবর, করোনাভাইরাস এবং জাতপাত নিয়ে ‘ব্যর্থতার’ কারণেই রুপানির উপর কোপ নেমে এসেছে। ঠিকমতো করোনাভাইরাসের ঢেউ সামলাতে পারেননি রুপানি। তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। পাশাপাশি পতিদার সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিজেপির জন্য মজবুত সমর্থন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন জৈন রুপানি। যেখানে পতিদার সম্প্রদায়ের উপর ভোটের ভাগ্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। সেই সম্প্রদায়ের সমর্থন পালটে গেলে যে কোনও নির্বাচনের হাওয়া ঘুরে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বিজেপির একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের এক বছরের সামান্য বেশি বাকি থাকতে মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ায় প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়াও কিছুটা রোখা যাবে। যে রাজ্যের ১৮২ সদস্যের বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী যে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তা মেনে মুখ্যমন্ত্রী (রুপানি) এগিয়ে গেলেও এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়কে চিহ্নিত করা যায়। প্রথমত করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে তাঁর ব্যর্থতা। নির্বাচনী হিসাব-নিকেশের পর যে মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছিল, তাও পূরণ করতে পারেননি রুপানি। তাই তাঁকে সরিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত নয়া ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।’
যদিও দিল্লিতে এক শীর্ষ বিজেপি নেতার দাবি, কাজের জন্য রুপানির উপর মোটেও কোপ নেমে আসেনি। বরং তরুণ এবং নতুন মুখ তুলে আনার যে নীতি আছে গেরুয়া শিবিরের, তা মেনেই রুপানিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিজেপি নেতৃত্বের বিকাশে বিশ্বাস করে। যেখানে নয়া মুখদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। গুজরাতে যা হয়েছে, তা নেহাতই প্রজন্মগত পরিবর্তন। উৎসাহের সঙ্গে নয়া দায়িত্ব দেবেন নতুন নেতারা।’
তারইমধ্যে গুজরাতের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চারজনের নাম উঠে আসছে। তাঁরা হলেন - নীতিন প্যাটেল, আর সি ফালদু, মনসুখ মাণ্ডবিয়া এবং সি আর পাটিল। তবে মাণ্ডবিয়া সদ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন। ফলে তাঁকে আবারও পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সংশ্লিষ্ট মহলের মত, সেই পরিস্থিতিতে উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিন বা কৃষিমন্ত্রী ফালদুরা এগিয়ে আছেন। তবে শেষপর্যন্ত মোদী বা অমিত শাহদের ভোট যেদিকে পড়বে, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।