মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ফ্ল্যাট পান এক মুসলিম মহিলা। তা নিয়ে প্রতিবাদ জানান ভদোদরার একটি আবাসনের বাসিন্দারা। ২০২০ সাল থেকে শুরু হয় প্রতিবাদ। গত ১০ জুনও প্রতিবাদ জানান। সেই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করতে রাজি হল না গুজরাট হাইকোর্ট। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাইকোর্ট জানিয়েছে যে বিষয়টি জনস্বার্থ সংক্রান্ত নয়। ওই মহিলা নিজেই আদালতে মামলা করতে পারেন। তারইমধ্যে ভদোদরার কালেক্টর বিএম শাহ জানিয়েছেন যে সরকারি আবাসন প্রকল্পের ক্ষেত্রে গুজরাটের উপদ্রুত এলাকা আইন কার্যকর হবে না। তাই ওই মুসলিম মহিলার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ জমা পড়েছে, তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না।
ঘটনাটি ঠিক কী হয়েছিল?
ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ফ্ল্যাট পান ওই মুসলিম মহিলা। যিনি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ওই সরকারি প্রকল্পের আওতায় যাঁদের ফ্ল্যাট প্রদান করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একমাত্র মুসলিম হলেন ওই মহিলা (সংশ্লিষ্ট আবাসনে)।
ওই মহিলা সরকারি প্রকল্পের আওতায় পাওয়া ফ্ল্যাটে যাওয়ার আগেই ভদোদরার কালেক্টর, ভদোদরা পুরনিগমের মেয়র এবং ভদোদরা পুরনিগমের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন ওই আবাসনের ৩৩ জন বাসিন্দা। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁদের আবাসনে 'মুসলিম' মহিলা থাকবেন বলে আপত্তি প্রকাশ করেন। ওই মহিলা আসার ফলে সমস্যা হতে পারে বলেও দাবি করা হয়।
তাঁরা দাবি করেন যে ওই মুসলিম মহিলাকে যেন ওই ফ্ল্যাট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে অন্য সরকারি আবাসন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন তাঁরা। ওই অভিযোগপত্রে যুক্তি দেখানো হয় যে ওই এলাকা আদতে গুজরাটের উপদ্রুত এলাকা আইনের আওতায় চলে আসে।
হাইকোর্টে আবেদন
সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গুজরাট হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ব্রিজেশ ত্রিবেদী। ওই মুসলিম মহিলাকে ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রেক্ষিতে যে প্রতিবাদ চলছে, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুনীতা আগরওয়াল এবং বিচারপতি প্রণব ত্রিবেদী যাতে স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করেন, সেই আর্জি জানান।
যদিও সেই আর্জি গ্রহণ করতে রাজি হয়নি হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি আগরওয়াল জানান যে ওই মুসলিম মহিলা নিজেই নিজের পিটিশন দাখিল করতে পারেন। তিনি যদি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন, তাহলে নির্দেশ দেওয়া হবে। কারও যদি অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহলে তাঁর হাতে সুবিচার পাওয়ার সুযোগ আছে।