ভারতের বিরুদ্ধে যে তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে লাগাতার তথ্য সরবরাহ করেছেন, সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন খলিস্তানি জঙ্গি গুরপতবন্ত সিং পান্নুন।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সংগঠন শিখ ফর জাস্টিস (এসএফজে), কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দফতরের সঙ্গে নিয়মিত যোগযোগ রেখে চলেছে। পান্নুনের অনুগামী হরদীপ সিং নিজ্জর খুন হওয়ার পর থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে এসএফজে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে ভারতবিরোধী নানা তথ্য সরবরাহ করেছে।
কানাডার খবরের চ্যানেল সিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পান্নুন জানিয়েছেন, ভারতীয় হাই কমিশন কীভাবে স্পাই বা গুপ্তচর নেটওয়ার্ক চালায়, সেই সম্পর্কে জাস্টিন ট্রুডোর কার্যালয়কে তাঁরা 'বিস্তারিত তথ্য' সরবরাহ করেছেন।
পান্নুন আরও দাবি করেছেন, কানাডার সরকার যেভাবে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, তাতেই স্পষ্ট, যে তারা 'সুবিচার, আইন-শৃঙ্খলা এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর'।
ওই একই সাক্ষাৎকারে পান্নুন বলেন, 'গত প্রায় দু-তিন বছর ধরে 'শিখ ফর জাস্টিস' কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।'
উল্লেখ্য, ইতিমধ্য়েই ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরমে উঠেছে। কানাডার কূটনৈতিক প্রতিনিধি স্টুয়ার্ট হুইলারকে সমন পাঠানোর পর সোমবারই সেদেশের আরও ছয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে নয়া দিল্লি।
সেই ঘটনার ঠিক পর-পরই পান্নুনের এই সাক্ষাৎকার এবং সেই আলাপচারিতায় তাঁর এই স্বীকারোক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁদের দেশের পুলিশ প্রমাণ পেয়েছে যে ভারত সরকারের এজেন্টরা কানাডার নাগরিকদের বেআইনিভাবে নিশানা করেছেন এবং তাঁদের সম্পর্কে অপ্রচার করেছেন।
এরপর কানাডার বিদেশ মন্ত্রক ঘোষণা করে, তারা ছয় ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। সঙ্গে সঙ্গে এর কড়া জবাব দেয় ভারত। নয়া দিল্লির তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, ভারতীয় হাই কমিশনার এবং অন্য কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। যা কোনও মতেই বরদাস্ত করা যায় না।
এই গোটা ঘটনায় সরাসরি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর সরকারকে পালটা আক্রমণ করেছে ভারত। নয়া দিল্লি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, ট্রুডো এবং তাঁর সরকার দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে নিশানা করছে।
এমনকী, কানাডার সরকারের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের ভারতবিরোধী কার্যকলাপে মদত দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছে নয়া দিল্লি। যেভাবে এই সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কানাডায় কর্মরত ভারতীয় কূটনীতিক এবং ভারতীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতৃত্বকে হেনস্থা করছে ও ভয় দেখাচ্ছে, তারও সমালোচনা করেছে ভারত সরকার।