নোটবন্দির কারণে কষ্ট হতে পারে। কিন্তু সেটার ভিত্তিতে সরকারের ৫০০ ও ১ হাজারের নোট বাতিলকে ত্রুটিপূর্ণ বলা যেতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টকে এমনটাই জানাল কেন্দ্র সরকার। এর পাশাপাশি সরকার জানিয়েছে, পুরনো নোট বদল করার জন্য ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়নি।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোটবন্দি করে মোদী সরকার। প্রায় ৮৬% কাগজী নোট ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সরকার পক্ষের হয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি বলেন, 'এই বিজ্ঞপ্তি জারি করার সময় (৮ নভেম্বর) এবং স্পেসিফাইড ব্যাঙ্ক নোটস (সেসেশন অফ লায়বিলিটিস)-এর কারণে সমস্যা এবং অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করা যায় না। আরও পড়ুন: ঢাকি সমেত গোটা প্যানেল বিসর্জন দেব, প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে বিস্ফোরক বিচারপতি
নোটবন্দিকে চ্যালেঞ্জ করে করা একগুচ্ছ পিটিশনের জবাবে এই বিষয়ে জানায় কেন্দ্র সরকার। বিচারপতি এস আব্দুল নাজির, বিআর গাভাই, এএস বোপান্না, ভি রামাসুব্রমানিয়ান এবং বিভি নাগারথনার একটি বেঞ্চ মঙ্গলবার এই বিষয়ে শুনানি করেন।
পিটিশন জমা দেওয়া এক আবেদনকারীর দাবি, নোটবন্দির সময়ে তিনি বিদেশে ছিলেন। এদিকে তাঁর বাড়িতে অনেক নগদ টাকা ছিল। তাঁর দেশে ফিরতে ফিরতে দেরি হয়ে যায়। ফলে ৫০০-১,০০০-এর নোট আর তাঁর বদল করা হয়নি। এখন এই টাকা নিয়ে তিনি কী করবেন? এর আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট আপাতত তাঁকে এই টাকা সাবধানে রাখতে অনুরোধ করে। সেই শুনানিতে সরকার পক্ষ জানায়, বিশেষ ক্ষেত্রে নোট বদলের ফের সুযোগ দেওয়ার কথা ভেবে দেখা হতে পারে।
আবেদনকারীরা প্রশ্ন করেছিলেন যে, কালো টাকা, সন্ত্রাসের অর্থায়ন বা জাল নোট রোধের লক্ষ্য আদৌ অর্জন করা গিয়েছে কিনা। নোটবন্দির সাফল্যের বিষয়ে কোনও গবেষণা বা পরিসংখ্যান জানতে চাওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্র জানায়, কোনও উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য মাথায় রেখে, বিবেচনা এবং আলোচনার পরেই সরকার কোনও নীতি বা আইন কার্যকর করে। এর বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে হয় তো কোনও খামতি থেকে যেতে পারে। কিন্তু তার মানেই এই নয় যে সেই নীতি বা আইন খারাপ বা সেটি সম্পূর্ণভাবে বাতিল/প্রত্যাহার করার মতো। আরও পড়ুন: Indian Economy: বিশ্বজুড়ে মন্দা হলেও ৬.৯% বাড়বে ভারতীয় অর্থনীতি: বিশ্ব ব্যাঙ্ক
RBI এই বিষয়ে জানিয়েছে যে, নোটবন্দির বিজ্ঞপ্তিতে কোনও পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল না। সিনিয়র আইনজীবী জয়দীপ গুপ্তা আদালতকে বলেন, RBI সেন্ট্রাল বোর্ড ৮ নভেম্বর বৈঠকে বসেছিল। তাঁরা বিষয়টিকে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। প্রয়োজনীয় নিয়ম-নীতি মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক যে সরাসরি সরকারের নির্দেশ চুপচাপ পালন করেছে, এমনটা একেবারেই নয়, জানান আইনজীবী।