প্রায় দুই দশকের ওপর সাংবাদিকতা করার পর এনডিটিভি-র চাকরি ছেড়ে মার্কিনভূমে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল নিধি রাজদানের। সেখানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষকতা করার কথা ছিল। কিন্তু পরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাস্তবে হার্ভার্ড নয়, অনলাইন ফিশিং স্ক্যামের খপ্পড়ে পড়েছেন তিনি। শুক্রবার টুইটারে এই কথা জানালেন এই প্রখ্যাত সাংবাদিক। তারপরেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। কেমন ভাবে এত বড় প্রতারণা হল সেই নিয়ে চলছে আলোচনা। এর মধ্যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে যে তাদের কোনও সাংবাদিকতার বিভাগই নেই।
হার্ভার্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তাদের নথিতে নিধি রাজদানকে চাকরি দেওয়ার কোনও তথ্য নই। রাজদান বলেন যে তাঁর মনে হয়েছিল তিনি এই নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের চাকরি পেয়েছেন কিন্তু ক্রমশই কিছু যে বেঠিক সেটা বুঝতে পারেন তিনি, যখন করোনার অজুহাত দিয়ে তাঁর জয়েনিং ডেট সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে জানুয়ারি ২০২১ করা হয়।
হার্ভার্ডে বর্তমানে পুরোপুরি অনলাইন ক্লাস করাচ্ছে। কিছু গোলমাল বুঝতে পেরে নিধি হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে চাকরি সংক্রান্ত, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠান তিনি। কিন্তু জানা যায় যে পুরোটাই ভুয়ো ছিল ও তিনি সাইবার অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন। ফিশিংয়ের শিকার হয়েছেন তিনি, বলে অভিযোগ করেন নিধি। ফিশিং হচ্ছে এমন একটি সাইবার অ্যাটাক, যেখানে আপনার সংবেদনশীল তথ্য হ্যাকার নিয়ে নেয় ফেক কোনও ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠিয়ে। অপরাধীদের শনাক্ত ও ধরার জন্য ইতিমধ্যেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এনডিটিভি-র প্রাক্তন সাংবাদিক।
নিধির বক্তব্য থেকে অবশ্য স্পষ্ট নয় হার্ভার্ডের কোন স্কুল বা ফ্যাকাল্টি তাঁকে এই চাকরির প্রস্তুাব দিয়েছিল। হার্ভার্ডে কোনও সাংবাদিকতার বিভাগই নেই! জানা গিয়েছে যে HR-এর যাদের নাম নিধি বলছেন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিল বলে, তাঁরা আদপেই হার্ভার্ডে কাজ করেন না। নিধিকে যে অফার লেটার পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যেও অনেক ত্রুটি আছে বলে জানিয়েছে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। অন্তত তিনটি পয়েন্ট এমন আছে যেগুলি সাধারণত হার্ভার্ডের অফার লেটারে থাকে না বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনার বিহিত করার জন্য জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সাইবার সেলের কাছে অভিযোগ করেছেন নিধি রাজদান। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে তিনি জানান যে শুভাকাঙ্খীদের থেকে সমর্থন পেয়ে তিনি অভিভূত। তবে আপাতত কিছুদিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছুটি নিচ্ছেন বলেও জানান এই প্রখ্যাত সঞ্চালিকা। এই বিতর্ক নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় আর কিছু তিনি বলবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে তাতে প্রশ্ন থামছে না। পুলিশ তদন্তে উত্তর মেলে কিনা, সেটাই দেখার।