আবার হাথরাস। চারদিকে শুধুই লাশ। সেখানে দেখা যাচ্ছে মহিলা–শিশুদের নিথর দেহ। সৎসঙ্গ শেষে বেরনোর সময় হুড়োহুড়িতে প্রাণ কেড়ে নিল শতাধিক মানুষের। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় আবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এল উত্তরপ্রদেশের হাতরাস। এখানে স্থানীয় ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার হরি (ভোলে বাবা) ছিলেন সৎসঙ্গ আয়োজনের মূল আয়োজক। অথচ এই বাবাকেই এখন পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশের দাবি। এমন ঘটনার পর বাবাজি কি চম্পট দিলেন? উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে ২০২০ সালে ২০ সেপ্টেম্বর এই হাতরাসেই দলিত তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। এবার সেখানে ধর্মীয় সভায় পদপিষ্ট হয়ে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান পুলিশের। কারণ এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যোগী প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। তার মধ্যেই মৈনপুরী জেলার রাম কুঠির চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার হরিকে (ভোলে বাবা) পাওয়া যাচ্ছে না। কোনও খোঁজ নেই। এই বিষয়ে ডেপুটি পুলিশ সুপার সুনীল কুমার জানান, ক্যাম্পাসের ভিতরে বাবাজিকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এই বাবার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ এই বাবাজি হঠাৎ কোথায় উধাও হলেন? আর বাবাজিও কি পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন? তাহলে তাঁর দেহ কোথায়? এমন সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশের মনে। এই বিষয়ে ডেপুটি পুলিশ সুপার সুনীল কুমার সংবাদসংস্থা এএনআই–কে বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসের ভিতরে বাবাজিকে খুঁজে পাইনি। তিনি ওখানে নেই।’ আর আলিগড়ের জেলাশাসক বিশাখ জি আইয়ার বলেছেন, ‘মোট ২৩টি দেহ আলিগড়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আর তিনজন আহত মানুষকে চিকিৎসার জন্য জওহরলাল মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা স্থিতিশীল এবং একজনের অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক। আমরা হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলেছি।’
আরও পড়ুন: গোপন আঁতাত করে প্রাথমিকে ‘ভুয়ো ইন্টারভিউ’ হয়, লেনদেন ১৫ কোটির সন্দেহ সিবিআইয়ের
এছাড়া ইতিমধ্যেই ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর মিলেছে। সেটা আরও বাড়তে শুরু করেছে বলেও খবর। এই বিষয়টিতে হাথরাসের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ মনজিৎ সিংয়ের কথায়, ‘মোট ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩২ জনের দেহ এখানে আনা হয়েছে। তার মধ্যে ১৯ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তবে আরও চিহ্নিত করার কাজ চলছে।’ এই সৎসঙ্গের অনুমতি দিয়েছিল মহকুমা শাসকের দফতর। জড়ো হয়েছিলেন অন্তত পাঁচ হাজার পুণ্যার্থী। ছোট মঞ্চ, ভিড়ে ঠাসা মাঠ দেখা গিয়েছিল। ভক্তদের ঢল সামলানোর পরিকাঠামো ছিল না। মাঠ থেকে বেরনোর রাস্তাও ছিল ছোট। বাবাজি বেরিয়ে যেতেই অনেক ভক্তই সেই রাস্তায় এসে প্রণাম করছিলেন। সামনে রাস্তাও ছিল একটু উঁচুতে। নর্দমার উপর নির্মিত। সেখানে পৌঁছতে গিয়ে ভিড়ের চাপে পড়ে যান অনেক মহিলা ও শিশু। আর তখনই হুড়োহুড়ির জেরে পদপিষ্ট হয় মৃত্যু হয় অন্তত ১১৬ জনের বলে অভিযোগ।