উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে চারজন উচ্চ জাত ব্যক্তির হাতে ১৯ বছরের এক দলিত কন্যার খুন ও ধর্ষণের বিষয়টির প্রভাব পড়তে পারে পড়শি বিহারের নির্বাচনী হিসেবনিকেষে। এমনটাই মনে করছেন দুই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির নেতারা।
হাথরাস ঘটনায় ধর্ষিতার মৃতদেহ পরিবারের আপত্তি সত্বেও গভীর রাতে পুলিশ পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে প্রতিবাদে ফুঁসছে হাথরাস। তড়িঘড়িতে এখন ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে বিজেপি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তারপরেই বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করেছেন যোগী। কিন্তু কেন রাতের অন্ধকারে পরিবার মানা করা সত্বেও সৎকার করল পুলিশ, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্বাভাবিক ভাবেই মাঠে নেমে পড়েছেন বিরোধীরা। বিএসপি সুপ্রিমো দলিত নেত্রী মায়াবতী বলেন পুলিশের কাজে সংশয় ও বিক্ষোভ বাড়ছে। এই বিষয় সুপ্রিম কোর্টকে নিজে থেকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে আর্জি জানান তিনি যাতে মৃতার পরিবার বিচার পায়।
কংগ্রেসের তরফে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করেছেন। বিরোধীদের কথাকে বিতর্ক উস্কে দেওয়ার চেষ্টা বলে লঘু করে দেখার চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা, দলিতদের বিক্ষোভ না দানা বাঁধে এই ধর্ষণ ও হত্যা নিয়ে ।
যদি প্রতিবাদ ঘনীভূত হয় তাহলে সেটার প্রভাব বিহারেও পড়তে পারে বলে আরেক নেতা মনে করেন। বিহারে ১৮ শতাংশ দলিত ভোট আছে ও জাতপাতের রাজনীতি বিহারের একটি অনস্বীকার্য বাস্তবতা।
এর আগেও গুজরাত ভোটের আগে উনা হিংসার জেরে দলিত বিক্ষোভের মুখে পড়ে বিজেপি। সেবার কান ঘেঁষে জেতে বিজেপি। ভিমা কোরেগাঁও হিংসা ও রোহিত ভেমুলার মৃত্যু নিয়ে বিরোধীরা অনেক প্রতিবাদ করলেও নির্বাচনী রাজনীতিতে তার কোনও প্রভাব পড়েনি।
দেশে প্রায় ১৬ শতাংশ মানুষ দলিত। তাদের ভোট গত কিছু নির্বাচনে গিয়েছে কমলের খাতায়। সেটা যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্য অত্যন্ত সচেষ্ট বিজেপি। হালে ঘোষিত নাড্ডার টিমেও তাই জায়গা পেয়েছেন জাতব জাতের দুষ্মন্ত গৌতম। বিজেপির তফসিলি জাতি মোর্চার প্রধান লাল সিং আচার্য জানিয়েছেন হাথরাস ঘটনায় রাজ্য সরকার যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবে। বিরোধীদের অঙ্গুলিহেলনে সব বিক্ষোভ হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। এত সবের পরেও যোগী সরকারের পুলিশের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।