বিয়ের অনুষ্ঠান চলার মধ্যে ছাদনাতলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল কনের। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তড়িঘড়ি শ্যালিকার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন হবু বর। সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ইটাওযায়।
বিয়ের ছাদনাতলায় উপস্থিত হয়ে গিয়েছিলেন নিমন্ত্রিতরা। হবু বর মঞ্জিস কুমার ও তাঁর আত্মীয় স্বজনেরাও সময়মতো চলে এসেছিলেন কনের বাড়িতে। কনে সুরভিও সেজে বিয়ের পিঁড়িতে বসার জন্য প্রস্তুত। কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই যুগলের মালাবদল, সাত পাকে বাঁধা পড়ার আনন্দে মেতে উঠেছিল উভয়পক্ষ। তাল কাটল কনে মণ্ডপে উঠতেই। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আচমকা ছাদনাতলাতেই সংজ্ঞাহীন হয়ে লুটিয়ে পড়লেন সুরভি। হুলুস্থুলু কাণ্ড ঘটে গেল বিয়ের আসরে। তড়িঘড়ি ডাকা হল চিকিৎসককে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করে জানালেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন কনে!
কনের মৃত্যুর খবরে মুহূর্তের মধ্যে বিয়ের আনন্দ বদলে যায় বিষাদে। এই পরিস্থিতিতে কী করা যায়, তা নিয়ে এর পরেই দু‘পক্ষের আত্মীয়রা আলোচনায় বসেন। তাঁদের মধ্যেই কেউ একজন উপায় হিসাবে পরামর্শ দেন, কনের ছোটো বোন নিশার সঙ্গেই বিয়ে দেওয়া হোক পাত্রের। সঙ্গে সঙ্গেই দুই পরিবারের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দিদির জায়গা পাত্রী হিসাবে ছোট বোনকেই বিয়ে দেওয়া হবে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে কনের ছোট বোন নিশাও এই বিয়েতে সম্মতি দেয়। এর পরেই মৃত কনেকে পাশের একটি ঘরে রেখে, একই ছাদনাতলায় শ্যালিকার সঙ্গেই অবশেষে বিয়ে দেওয়া হয় পাত্রের।
মৃতের দাদা সৌরভ বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছিলাম না এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত। দু’তরফের আত্মীয়রা আলোচনায় বসেন। তাঁদের মধ্যেই এক আত্মীয় ছোটো বোন নিশার সঙ্গে পাত্রের বিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। তারপরেই উভয়পক্ষ সেই মতে রাজি হয়ে যান। সুরভির দেহ পাশের ঘরে রেখে নিশার সঙ্গে পাত্রের বিয়ে দেওয়া হয়। পাত্রপক্ষ চলে যাওয়ার পর সুরভির শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।’
সুরভির কাকা আজব সিং বলেন, ‘ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে পরিবারকে।একদিকে বড় মেয়ের দেহ পাশের ঘরে পড়ে রয়েছে। অন্য দিকে, ওই কম সময়ের মধ্যেই ছোটো মেয়ের বিয়ের আয়োজন। এই ধরনের মিশ্রিত আবেগে কোনও দিনও পড়িনি আমরা।একদিকে সুরভির মৃত্যুর শোক, অন্য দিকে নিশার বিয়ের সুখ এই মিশ্রিত অনুভূতিতে ডুবে গিয়েছে গোটা পরিবার।’