মহিলাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেছিলেন তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। আর সেই দাবি করে মহিলাকে তার দু’বছরের শিশুর থেকে তারা আলাদা রেখেছিলেন। অবশেষে মহিলার হেফাজতেই শিশুকে রাখার নির্দেশ দিলে হাইকোর্ট। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি জসজিৎ সিং বেদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মাকে চিকিৎসার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হলেও সেখানে থাকার সময় তিন বছরের কম বয়সি শিশুকে তার থেকে আলাদা করা উচিত নয়। শিশুকে মায়ের হেফাজতে না রাখলে শুধুমাত্র শিশু ও মা দুজনেই মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ওই মহিলা পাঠানকোটে বসবাসকারী তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছ থেকে দু-বছরের মেয়েকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্টে মহিলার স্বামী দাবি করেছিলেন যে তাঁরা নয়ডায় ছিলেন। কিন্তু করোনা অতিমারি চলাকালীন পাঠানকোটে ফিরে আসেন। পরে তাঁর স্ত্রীর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তখন স্বামী শিশুটিকে নিয়ে পাঠানকোটে চলে যান। তিনি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সন্তানের প্রতি যথাযথ মনোযোগ ও যত্ন না দেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন।
আদালত জানায়, মহিলার শ্বশুরবাড়ির তরফে তার মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। অথচ মহিলাটি কোনও হাসপাতালে ভর্তি না থেকে একটি সংস্থায় কাজ করছেন। ওই মহিলার স্বামীর দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। বেঞ্চ জানায়, ৫ বছরেরও কম একটি শিশুকে কখনই মায়ের কাছ থেকে আলাদা রাখা উচিত নয়। শিশুর বিকাশ এবং কল্যাণের বিষয়টি নির্ভর করে শিশুদের প্রতি মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহের ওপর। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘মায়ের কোল হল একটি প্রাকৃতিক দোলনা যেখানে শিশুর নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যায় এবং এর কোনও বিকল্প নেই। মাতৃ যত্ন এবং স্নেহ তাই একটি শিশুর সুস্থ বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।’