উত্তরভারত জুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। মার্চের প্রথম থেকেই কার্যত চালিয়ে ব্যাট করছে তাপমাত্রা। গরমের দাবদাহের প্রভাব পড়েছে ফসলের ক্ষেতেও। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে মূল শীতকালীন শস্য হল গম। যা গরমের শুরুর দিকে কাটা হয়। তবে হোলির আশপাশ থেকেই এই রাজ্যগুলিতে প্রবল গরমের দাপটে ফসল নষ্ট হতে শুরু করেছে বলে খবর। যার জেরে গমের রপ্তানির ভাবনা চিন্তা আপাতত বিশবাঁও জলে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে বিভিন্ন দেশে রয়েছে বাড়বাড়ন্ত গমের চাহিদা। ভারত নির্ভর করছিল ফসল মজুতের উপর। টার্গেট ছিল মিশর,তুরস্ত, ফিলিপিন্সে গম রপ্তানির। সেই বাজারকে ধরার চেষ্টায় ছিল ভারত। এদিকে, চাহিদার বাজার দেশের বাইরে তুঙ্গে থেকেও লাভের লাভ হয়নি। কারণ তাপপ্রবাহের জেরে গমের ফলে মন্দা এতটাই দেখা গিয়েছে যে, কৃষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি করা অনেকটাই ঝুঁকির কাজ হয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারিতে মনে করা হয়েছিল, গত বছর ১০৯.৫৯ মিলিয়ন টনের উৎপাদনকে ছাপিয়ে গিয়ে এই বছর ১১১.৩২ টন গম উৎপাদন হবে। তবে মার্চ থেকেই তাপমাত্রা উর্ধ্বগামী হওয়াতে সেই আশায় কার্যত ডল পড়ে গিয়েছে। আরও পড়ুন-হু হু করে বাড়ছে কোভিড! মাস্ক পরা নিয়ে কোন কড়া বিধির নির্দেশ এই মুখ্যমন্ত্রীর?
উল্লেখ্য, গম কাটার আগে চরম শুষ্ক এবং গরম আবহাওয়ার ধরন টার্মিনাল-হিট স্ট্রেস নামে পরিচিত। এরফলে বহু ফসল নষ্ট হয়। এই ধরনের আবহাওয়ার প্যাটার্ন শেষবার ২০১০ সালে দেখা গিয়েছিল, বলছে, লুধিয়ানার বোরলগ ইনস্টিটিউট। সেই বছর গমের চাষ ২৬ শতাংস পড়ে গিয়েছিল পঞ্জাবে। এদিকে, বিশ্ব বাজারে ভারত গমের রপ্তানি নিয়ে পদক্ষেপও শুরু করে দিয়েছিল। ১৫ এপ্রিলই মিশর, ভারত থেকে গম আমদানি করার বিষয়ে পদক্ষেপ করে। তার মাঝে ভারতের গম ফলন নিয়ে আসে উদ্বেগের কালো মেঘ। কৃষিবিজ্ঞানী রাজিন্দর সিং বলছেন, উত্তর ভারতের একটা বড় অংশের বহু কৃষকই ফসল উৎপাদনে মন্দার মুখ দেখেছেন। তিনি বলছেন, 'ফসল উৎপাদন' তাপপ্রবাহের জেরে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমেছে। গত ১৫ বছরে এমন পরিস্থিতি সেভাবে আসেনি বলেই ব্যাখ্যা করছেন কৃষকরাও।