নেপালে গত ৩৬ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর জেরে মূল সড়ক ও মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে।
নেপালের পুলিশ মুখপাত্র ড্যান বাহাদুর কার্কি জানিয়েছেন, প্রবল বন্যায় অন্তত আট জন নিখোঁজ। বেশ কিছু মানুষ বন্যার জলে ভেসে গিয়েছেন বা ভূমিধসে চাপা পড়েছেন। এছাড়া ১২ জন আহত হয়েছেন এবং তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
কার্কি আরও বলেন, ‘উদ্ধারকর্মীরা ভূমিধস পরিষ্কার করছেন। সড়কগুলো দ্রুত খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করা হচ্ছে।’
জেলার এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব নেপালের কোসি নদী, যা প্রায় প্রতি বছরই ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিহার রাজ্যে মারাত্মক বন্যা সৃষ্টি করে, বর্তমানে বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনসারি জেলার প্রশাসনিক কর্তা বেদ রাজ ফুয়াল জানিয়েছেন, ‘কোসি নদীতে জল প্রবাহ বাড়ছে এবং আমরা বাসিন্দাদের সম্ভাব্য বন্যা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলেছি।’
আরও পড়ুন। 'বাড়িটাও জলের তলায়!' অসমে ভয়াবহ বন্যা,৫২জনের মৃত্যু, ২৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
তিনি জানান, সকাল ৯টায় কোসি নদীর জলের প্রবাহ ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৩৬৯,০০০ কিউসেক, যা তার স্বাভাবিক প্রবাহ ১৫০,০০০ কিউসেকের চেয়ে অনেক বেশি।
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, কোসি ব্যারেজের সব ৫৬টি স্লুইস গেট খোলা হয়েছে জল নিষ্কাশনের জন্য, যেখানে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রায় ১০-১২টি গেট খোলা থাকে।
পশ্চিমের নারায়ণী, রাপ্তি ও মহাকালী নদীতেও জল প্রবাহও বাড়ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
পার্বত্য বেষ্টিত কাঠমাণ্ডুতে, বিভিন্ন নদী তাদের তীর ছাড়িয়ে সড়কগুলো প্লাবিত করেছে এবং অনেক ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে দেখা গিয়েছে, মানুষ কোমর-গভীর জলে হাঁটছে বা বালতি ব্যবহার করে তাদের ঘর থেকে জল বার করে ঘর খালি করছে।
মধ্য জুনে বার্ষিক মৌসুমি বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে ভূমিধস, বন্যা ও বজ্রপাতের কারণে নেপালজুড়ে অন্তত ৫০ জন মারা গেছেন। পার্বত্য প্রধান নেপালে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা সাধারণত বর্ষা মরসুমে ঘটে, যা সাধারণত মধ্য জুন থেকে মধ্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে সাম্প্রতিক কয়েক দিনে বন্যায় কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছেন এবং হাজার হাজার মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছেন।