ঝাড়খণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে প্রচারে গিয়ে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তোপ দেগেছেন জেএমএম-কংগ্রেস শাসক জোটকে। আর সেই আক্রমণের জবাবে প্রতি আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। আর তাতেই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন তিনি। গড়ওয়া বিধানসভা কেন্দ্রে এক জনসভায় হেমন্ত বলেন, 'আমি জানতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে বিজেপির তলে তলে কোনও চুক্তি আছে কি না। অনুগ্রহ করে আমাদের জানানো হোক, কীসের ভিত্তিতে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নিজেই বলছে, তাদের শাসিত রাজ্য দিয়েই অনুপ্রবেশকারীরা আসছে ভারতে।'
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ অগস্টই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে এদেশেই আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে সরকার জানায়, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের আবহে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় চেয়েছিলেন। সেই মতো তাঁকে 'আপাতত' এখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার একের পর এক মামলায় শেখ হাসিনার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই আবহে তারা হাসিনাকে ভারত থেকে নিজেদের দেশে ফেরানোর ইচ্ছে প্রকাশও করেছে। এরই মাঝে এবার ভারতীয় ঘরোয়া রাজনীতিতে হাসিনা প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে তোপ দাগল জেএমএম।
উল্লেখ্য, রবিবারই ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ইস্তেহার প্রকাশ করে বিজেপি। সেই সময় অমিত শাহ ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সরব হন। শাহের কথায়, 'আপনারা (জেএমএম সরকার) অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়েছেন। আপনি অনুপ্রবেশকারীদের আপনার ভোটব্যাঙ্ক বানিয়েছেন। আজ আমি ঝাড়খণ্ডের জনগণকে জানাতে চাই যে, তোষণের রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে বিজেপি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেবে এবং ঝাড়খণ্ডের পুনর্গঠন করবে।' তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনুপ্রবেশকারীরা এসে আদিবাসী মেয়েদের ভুল বুঝিয়ে, লোভ দেখিয়ে বিয়ে করছে এবং জমি দখল করে নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, আসন্ন ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং অনুপ্রবেশ ইস্যু দু'টিকে হাতিয়ার করে এগোতে চাইছে বিজেপি। যদিও ইউনিফর্ম সিভিল কোডের থেকে আবিবাসীদের বাইরে রাখা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অমিত শাহ। যদিও অমিত শাহের এই দাবির পালটা যুক্তি দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস নেতা রাজেশ ঠাকুর। তাঁর কথায়, 'যদি অমিত শাহ এখানে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এই বক্তব্য দিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি ভুল করেছেন। আর যদি তিনি বিজেপি নেতা হিসেবে এই সব কথা বলে থাকেন, তাহলে ঠিকই আছে। কারণ তাঁরা স্বভাবেই মিথ্যুক। আমার প্রশ্ন, তাঁদের এখন এটা কেন বলতে হচ্ছে যে আদিবাসীদের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি থেকে বাইরে রাখা হবে? কারণ এর আগে নিশ্চয় তারা আদিবাসীদেরও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির অন্তর্গত করেছিল।'