‘বাঘিনী’ আখ্যা দিয়েও কংগ্রেসে আস্থা রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘একা’ করেছে শিবসেনা। আর এবার কংগ্রেসে আস্থা রাখার বার্তা মিলল প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের তরফে। ২০২৪ সালের লোকসভার লড়াইতে যে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা যে মমতার বদলে রাহুল গান্ধীর পাশেই থাকবে, সেই বার্তা মিলেছে। উল্লেখ্য, কংগ্রেস এবং আরজেডির সঙ্গে জোট বেঁধে ঝাড়খণ্ডে সরকার চালাচ্ছেন হেমন্ত সোরেন। আর এহেন হেমন্তই ‘বন্ধু’ মমতার থেকে বেশি ভরসা দেখাচ্ছেন কংগ্রেসের উপর।
প্রায় ৭ মাস আগে সম্পন্ন হওয়া পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রকাশ্যে মমতাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। প্রথমে জঙ্গলমহেলের বেশ কয়েকটি আসনে ভোটে লড়ার কথা বললেও পড়ে তৃণমূলকে সমর্থন জানিয়ে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। যদিও হেমন্তের জোটসঙ্গী কংগ্রেস এরাজ্যে লড়েছিল বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে। তবে হেমন্ত সোরেন আস্থা রেখেছিলেন মমতার উপর। তবে তখন প্রশ্ন ছিল একটি রাজ্যের। আ ২০২৪ সালে প্রশ্ন হবে গোটা দেশের। আর সেখানে মমতার ডাকে সাড়া দেওয়ার কোনও ইঙ্গিতই এখনও পর্যন্ত দেননি হেমন্ত।
দেশএ বর্তমানে মোদী বিরোধিতার অন্যতম প্রধান মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কথাটি হয়ত কংগ্রেসেরও বহু নেতা স্বীকার করবেন আড়ালে। তবে সংখ্যার নিরিখে তৃণমূল যে কংগ্রেসের তুলনায় বহু যোজন পিছিয়ে, তা জানেন মমতা নিজে। আর তাই অন্য রাজ্যে পা বাড়াচ্ছে তৃণমূল। তবে সেক্ষেত্রেও উত্তর-পূর্বের ছোট রাজ্যগুলিতে শাখা বিস্তার করে কংগ্রেসকে টেক্কা দেওয়া কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনেই। আর এহেন পাটি গণিতের হিসেব কষেই সঙ্গী জোগাড়ে মমতা ছুটেছেন দিল্লি থেকে মুম্বই। বৈঠক করেছেন শরদ পাওয়ার থেকে আদিত্য ঠাকরেদের সঙ্গে। তবে সেই বৈঠকে বিজেপি বিরোধিতার সুর মিললেও কংগ্রেসকে পাশ কাটি যাওয়ার পথ যে মেলেনি, তা একপ্রকার স্পষ্ট। শরদ পাওয়ারকে পাশে দাঁঢ় করিয়ে মমতা কংগ্রেস এবং ইউপিএকে তুলোধোনা করলেও হাত শিবিরের সমালোচনার পথে হাঁটেননি শরদ পাওয়ার। আবার মমতা মুম্বই ছাড়তেই শিবসেনা মুখপত্র সামনাতে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের বিকল্প নেই।
এই আবহে প্রতিবেশী রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র সুপ্রিয় ভট্টাচার্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল সরকার চালাচ্ছি। আমরা ২০১৯ সালের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে একসঙ্গে লড়েছি। ২০২৪ সালেও সেই সমীকরণ বজায় থাকবে বলে মনে করছি আমরা। বিজেপিকে ঠেকাতে প্রতিবেশী রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন জানানোর বার্তা দেওয়া হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালে আমাদের লক্ষ্য হবে ঐক্যবদ্ধভাবে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে বিতাড়িত করা। তাছাড়া, ঝাড়খণ্ডে তৃণমূলের কোনও সাংগঠনিক শক্তি নেই।’